দেশে নির্বাচন কমিশন অনেকটাই স্বাধীন: প্রধানমন্ত্রী

আগামী নির্বাচন দেশের সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশে নির্বাচন কমিশন অনেকটাই স্বাধীন। আমরা আপনাদের ওয়েস্টমিনস্টারের গণতন্ত্র অনুসরণ করি। নির্বাচন পর্যবেক্ষক এলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।

ব্রিটিশ অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের চারজন সাংসদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে অতীতে সামরিক শাসকদের কাছ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে আওয়ামী লীগের। সামরিক শাসকরা বন্দুক ব্যবহার করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করতো এবং রাজনৈতিক দল গঠন করে রাজনীতিতে পৃষ্ঠপোষকতা করতো। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নিতে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং ভোজ্যতেল আসত। কিন্তু যুদ্ধের কারণে এই আইটেমগুলোর আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে এই জিনিসগুলোর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের উদ্যোক্তাদের সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। আমরা সেখানে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাব।

ব্রিটিশ এমপিরা বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অবকাঠামোগত উন্নয়নে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা এ উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন।

প্রেস সচিব বলেন, ‘বিশেষ করে তারা মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু ও বঙ্গবন্ধু টানেলসহ কানেকটিভিটির উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।’ বাংলাদেশের উন্নয়নে এসব অবকাঠামো খুবই সহায়ক হবে বলে মনে করেন সংসদ সদস্যরা।

ব্রিটেনকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার উল্লেখ করে তারা বলেন, ব্রিটেন বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করতে চায়। তারা উল্লেখ করেছেন যে, যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনেক পরিশ্রমী এবং তারা ব্রিটিশ অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন। যুক্তরাজ্য জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে।

ব্রিটিশ এমপিরা বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়েও আলোচনা করেছেন বলে জানান ইহসানুল করিম। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ব্রিটিশ সহায়তার প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, সরকার জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আন্তরিক এবং নিজস্ব সম্পদ দিয়ে অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধু প্রাথমিকভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে বৃক্ষরোপণ এবং ৭৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণের মাধ্যমে প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন।

শেখ হাসিনা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, কমনওয়েলথ দেশগুলোর অভিভাবক হিসেবে তিনি সবসময় বাংলাদেশের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন। তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম. জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বাসস

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.