মেট্রোরেলের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

দেশের প্রথম মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ একটি আধুনিক মেট্রোরেল ব্যবস্থায় প্রবেশ করেছে।

বুধবার সকাল ১১টায় ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে তিনি উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মারক ডাকটিকেট, প্রথম দিনের কভার ও স্মারক নোট উন্মোচন করবেন। অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী উত্তরা উত্তর মেট্রোরেল স্টেশনের মূল ফলক পরিদর্শন ও মূল ফলকের পাশে গাছের চারা রোপণ করবেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি ও জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তমোহিদে।

প্রধানমন্ত্রী টিকেট অফিস মেশিন (টিওএম) ব্যবহার করে এমআরটি পাস কিনবেন এবং কনকোর্স লেভেল থেকে আগারগাঁওগামী প্ল্যাটফর্মে আসবেন। তিনি সবুজ পতাকা নাড়িয়ে দেশের প্রথম মেট্রোরেল চলাচলের আনুষ্ঠানিক যাত্রার শুভ সূচনা করবেন এবং এর পরের ট্রেনে আগারগাঁও আসবেন। তার সঙ্গে ২০০ জনের মতো আমন্ত্রিত অতিথি থাকবেন।

মধ্যবর্তী স্টেশনে কোনো স্টপেজ ছাড়াই উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চলবে। পরের দিন (বৃহস্পতিবার) থেকে যাত্রীরা ট্রেনে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রতিটি ট্রেন প্রথম কয়েক দিনের জন্য প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে ১০ মিনিট যাত্রীদের জন্য অপেক্ষা করবে কারণ নগরবাসী এই নতুন পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত নয়। প্রাথমিকভাবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ছয়টি বগি বিশিষ্ট ১০ সেট ট্রেন চলাচল করবে। আপাতত এই রুটে ধীরগতিতে ট্রেন চলবে। এ পর্যায়ে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ট্রেন চলবে, পরে চলাচলের সময় বাড়ানো হবে এবং চাহিদা অনুযায়ী ট্রেনের সংখ্যা বাড়নো হবে।

মেট্রোরেল উদ্বোধনের ফলে শুধু মহানগরীর যানজটই কমবে না, সরকারের সামগ্রিক রাজস্ব আদায়ও বাড়বে। পূর্ণ গতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে প্রতি সাড়ে তিন মিনিট অন্তর একটি ট্রেন চলবে। প্রতিটি স্টেশনে, যাত্রীদের ওঠা ও নামা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেনটি অপেক্ষা করবে। প্রতিটি ট্রেন ২ হাজার ৩০০ জন যাত্রী নিয়ে ঘন্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কম হবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল-কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটারের পুরো রুটটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ভ্রমণ করে মেট্রোরেল প্রতি ঘন্টায় ৬০,০০০ যাত্রী বহন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে ২০১৭ সালের ১ আগস্ট থেকে বাস্তবায়ন সংস্থা রেল প্রকল্পের জন্য ভায়াডাক্ট ইনস্টল করা শুরু করে। উত্তরা ফেজ-৩ এবং পল্লবী, রোকেয়া সরণি, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্র টিএসসি), দোয়েল চত্বর এবং জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত এ মেট্রোরেল লাইনের দৈর্ঘ্য ২০.১ কিলোমিটার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন যা এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত। পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নগরীর আগারগাঁও পয়েন্টে এলিভেটেড ভায়াডাক্টের প্রথম অংশ এবং এমআরটি লাইন-৬ এর নয়টি স্টেশনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। জাইকা (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি) মোট ২২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ১৬,৬০০ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা প্রদান করেছে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.