দলে ফিরেই মুমিনুলের হাফ সেঞ্চুরি

চট্টগ্রাম টেস্টে ভারতের কাছে ১৮৮ রানে হেরে সিরিজে ১-০ তে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ফিরতে ঢাকা টেস্টে জয়ের বিকল্প নেই সাকিব আল হাসানের দলের। এমন ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করছে বাংলাদেশ।

শুরু থেকেই খানিকটা অস্বস্তিতে ছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাকির হাসান এবং নাজমুল হোসেন শান্ত। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারাতে পারতো বাংলাদেশ। তবে মোহাম্মদ সিরাজ ক্যাচ লুফে নিতে না পারায় জীবন পান জাকির। উমেশ যাদবের প্রথম বলেই ফ্লিক করেছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তাতে লেগ সাইডে আউট হতে পারতেন শূন্য রানেই। এরপর অবশ্য ভারতের পেসারদের দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করেন তারা দুজন। তবে সুবিধা করতে পারছিলেন না জাকির-শান্তর কেউই।

তাদের দুজনের টিকে যাওয়া জুটি ভাঙেন উনাদকাট। ইনিংসের ১৫তম ওভারে পঞ্চম বলে জাকিরকে ফেরান বাঁহাতি এই পেসার। উনাদকাটের লাফিয়ে উঠা লেংথ ডেলিভারিতে খেলারই চেষ্টা করেননি জাকির। তাতে গ্লাভসে লেগে বল চলে যায় চার নম্বর স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা লোকেশ রাহুলের হাতে। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করা তরুণ এই ব্যাটার এদিন আউট হয়েছেন ১৫ রানে।

জাকির ফেরার পরের ওভারেই আউট হয়েছেন শান্ত। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট না চালিয়ে পা এগিয়ে দেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তাতে বল এসে সরাসরি আঘাত হানে শান্তর প্যাডে। ভারতের জোরালো আবেদনে আউট দিয়ে বসেন আম্পায়ার। অফ স্টাম্পের বেশ খানিকটা বাইরে হওয়ায় তৎক্ষণাৎ রিভিউ নেন শান্ত। রিপ্লেতে দেখা যায় অল্পের জন্য বল অফ স্টাম্পে আঘাত হানে। তাতে আম্পায়ার্স কলে আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যেতে হয় ২৪ রান করা শান্ত। তাতে নিজেকে খানিকটা দুর্ভাগ্যবান মনে করতে পারেন তিনি।

দ্রুতই ২ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন সাকিব আল হাসান এবং মুমিনুল হক। দেখেশুনে ব্যাটিং করার সঙ্গে বাউন্ডারিও মেরেছেন তারা দুজন। পেসারদের বিপক্ষে খানিকটা বেগ পেতে হলেও অশ্বিনকে বেশ ভালোভাবেই খেলেছেন মুমিনুল ও সাকিব। লম্বা সময় ধরেই ব্যাট হাতে সাফল্য পাচ্ছেন না মুমিনুল। তবে দুই ম্যাচ বিরতি দিয়ে একাদশে সুযোগ পাওয়া বাঁহাতি এই ব্যাটার এদিন বাংলাদেশকে আশা দেখাচ্ছেন।

সবশেষ ৯ ইনিংসে দুই অঙ্ক ছুঁতে না পারা এই ব্যাটার এদিন ছন্দে ফেরার আভাস দিয়েছেন। এদিকে দারুণভাবে সঙ্গ দিচ্ছেন সাকিবও। তবে লাঞ্চের যাওয়ার আগের ওভারে ফিরতে পারতেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। অশ্বিনের লেংথ ডেলিভারিতে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন সাকিব। তবে ব্যাটে-বলে না হয়নি। বল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে গেলে তা গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি ঋষভ পান্ত। স্টাম্পিং মিস করায় বেঁচে যান সাকিব।

মুমিনুলের সঙ্গে দারুণ ব্যাটিং ঘুরে দাঁড়িয়ে স্বস্তি নিয়ে লাঞ্চে গিয়েছিলেন সাকিব। তবে লাঞ্চ থেকে ফিরে প্রথম বলেই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাকে। উমেশ যাদবের লেংথ ডেলিভারিতে মিড অফের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন সাকিব। তবে ঠিকঠাক টাইমিং করতে না পারায় চেতেশ্বর পূজারার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক। ফলে দলকে বিপদে ফেলে সাকিবকে ফিরতে হয়েছে ১৬ রানে।

সাকিব ফিরলে ভালো খেলতে থাকা মুশফিকুর রহিমকে বিদায় করেছেন উনাদকাত। এই পেসারের করা বল ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ চলে যায় উইকেটরক্ষক ঋষভ পান্তের মুঠোয়। ফেরার আগে ৪৬ বলে ২৬ রান করেন মুশফিক। দুর্দান্তভাবেই শুরু করেছিলেন তিনি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে একই ওভারে টানা তিনটি বাউন্ডারিও হাঁকান তিনি। মুমিনুলের সঙ্গে তার জুটিটি ছিল ৪৮ রানের।

এদিকে মুশফিক ফিরলেও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুমিনুল। উনাদকাটের ওভারে দুই চার মেরে ৭৮ বলে ক্যারিয়ারের ১৬তম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। লম্বা সময় অফ ফর্মে থাকা মুমিনুল ১১ ইনিংস পর হাফ সেঞ্চুরি পেলেন। সবশেষ চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ড সফরে পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস খেলেছিলেন বাংলাদেশের সাবেক টেস্ট অধিনায়ক।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.