ইউক্রেনকে আরও সহায়তার লক্ষ্যে প্যারিসে সম্মেলন

একদিকে রাশিয়ার লাগাতার হামলার কারণে জ্বালানি অবকাঠামোর বেহাল অবস্থা, অন্যদিকে শীতের থাবা ইউক্রেনের মানুষের জীবন দূর্বিসহ করে তুলেছে৷ তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি বিদেশ থেকে বাড়তি গ্যাস ও অস্ত্র সরবরাহের ডাক দিয়েছেন৷

জি-সেভেন গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি বলেন, চলতি শীতকালে জ্বালানির ঘাটতি মেটাতে ইউক্রেনের বাড়তি প্রায় ২০০ কোটি কিউবিক মিটার গ্যাসের প্রয়োজন হবে৷ সেইসঙ্গে রুশ বাহিনীর মোকাবিলা করতে তিনি আধুনিক ট্যাংক, রকেট আর্টিলারি ও আরও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন৷

ইউক্রেনের উপর লাগাতার হামলা চালিয়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর গোলাবারুদ ফুরিয়ে আসছে বলে আমেরিকা ও ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থা মনে করছে৷ ফলে সে দেশ পুরানো ও কম নির্ভরযোগ্য গোলাবারুদ ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে৷ তবে জেলেনস্কি মনে করেন, অভাব সত্ত্বেও বর্তমানে আর্টিলারি ও ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষেত্রে রাশিয়ার বাড়তি সুবিধা রয়েছে৷ জি-সেভেন নেতাদের তিনি বলেন, দখলদারী বাহিনীর সেই ক্ষমতার ভিত্তিতেই ক্রেমলিন দাম্ভিক মনোভাব দেখিয়ে চলেছে৷

রাশিয়ার হামলার ফলে ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোর মারাত্মক ক্ষতির মাত্রা ধীরে ধীরে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ সরকারি সূত্র অনুযায়ী জরুরি জ্বালানি অবকাঠামোর প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ উৎপাদন কেন্দ্রের পাশাপাশি হাই-ভোল্টেজ পাওয়ার লাইনেরও ক্ষতি হয়েছে৷ স্বাভাবিকভাবে তেল ও গ্যাস সরবরাহও সব ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না৷ জেলেনস্কি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে ঘাটতি মেটাতে বাড়তি গ্যাস ব্যবহার করতে হচ্ছে৷

মঙ্গলবার প্যারিসে ইউক্রেনের যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠন সংক্রান্ত এক সম্মেলনে সে দেশের জন্য আরও সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে৷ প্রায় ৭০টি রাষ্ট্র, কোম্পানি ও সহায়তা সংগঠন সেই সম্মেলনে ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামো চালু রাখতে অবিলম্বে সহায়তার পথ খোঁজা হচ্ছে৷ জ্বালানি, পরিবহণ, কৃষি, পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত সহায়তার ক্ষেত্রে সমন্বয় করতে চায় দাতা দেশ ও সংগঠন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাষ্ট্রজোট হিসেবে সেই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে৷

জি-সেভেন নেতারাও ইউক্রেনের জন্য আর্থিক সহায়তার মধ্যে সমন্বয় করতে এক সাধারণ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন৷ জেলেনস্কি সেইসঙ্গে এক বিশেষ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন৷ ‘গ্লোবাল পিস ফর্মুলা সামিট’ নামের সেই সম্মেলনে তিনি ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা হাসিলের লক্ষ্যে ফর্মুলা বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা চাইছেন৷ জি-সেভেন ও অন্যান্য ‘বিবেকবান’ দেশগুলির নেতাদের নেতৃত্ব দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷ জেলেনস্কি রাশিয়ার উদ্দেশ্যেও কূটনৈতিক সমাধানসূত্রের লক্ষ্যে স্পষ্ট পদক্ষেপের আহ্বান জানান৷ তিনি খ্রিস্টমাসের আগেই দখলদারি শক্তি হিসেবে রাশিয়াকে ইউক্রেনের ভূখণ্ড ত্যাগ করার ডাক দিয়েছেন৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, ডিপিএ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.