স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে একসঙ্গে কাজ করবে বাজুস ও বিএফআইইউ

স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে জেলা উপজেলা পর্যন্ত সচেতনতা বাড়াতে বাজুস ও বিএফআইইউ একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকে সোনা চোরাচালান প্রতিরোধে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ও বাজুসের যৌথ কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এতে বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীরের নেতেৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেন।

জুয়েলারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসমূহ যেন মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়নের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত না হতে পারে সে লক্ষ্যে সকল জুয়েলারি ব্যবসায়ী সম্মিলিতভাবে কার্যক্রম গ্রহণ করবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বাজুস সভাপতি।

তিনি বলেন, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে নীতি নির্ধারণী সংস্থা ‘এশিয়া/প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিং (এপিজি)’ এর মাধ্যমে ২০১৫-১৬ মেয়াদে পরিচালিত তৃতীয় পর্বের মিউচ্যুয়াল ইভ্যালুয়েশনে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। তিনি উক্ত সময়ে বাজুস কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং এ রেটিং অক্ষুণ্ন রাখতে বাজুস ও বিএফআইইউ এর মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় আরও সুদৃঢ়করণ এবং স্বর্ণ চোরাচালান প্রতিরোধে যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রকে আরও প্রসারিত করার আহ্বান জানান।

এছাড়াও তিনি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২, সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এর আওতায় তাদের দায়-দায়িত্ব ও নির্দেশনা পালনে বাজুস সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিএফআইইউ এর সহযোগিতা কামনা করেন।

এসময় বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগারওয়ালা বলেন, জব্দ করা সব স্বর্ণ নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ দাবি আমাদের আরও আগেই ছিলো। আমরা চাই ডলার সংকটের সময় জব্দকৃত স্বর্ণ নিলামে বিক্রি করা হোক।

বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস বলেন, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়নের মতো আন্তর্জাতিক সমস্যা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের দৃঢ় অবস্থান রয়েছে। দুর্নীতি, মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সরকার “জিরো টলারেন্স” নীতি গ্রহণ করেছে।

এসময় তিনি বাংলাদেশে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে বিএফআইইউর ভূমিকা অবহিত করেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা মূল্যবান ধাতু বা পাথরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের স্বনিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) দায়-দায়িত্ব ও স্বর্ণ চোরাচালান প্রতিরোধে যৌথ কার্যক্রম গ্রহণে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত আর্থিক অপরাধ মোকাবেলায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২, সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ এবং এ সংক্রান্ত বিধিমালার আওতায় সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার দায়-দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯-এ রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থা হিসেবে মূল্যবান ধাতু ও পাথরের ব্যবসায়ীদের দায়-দায়িত্বের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নিদের্শনার পাশাপাশি তাদের সংগঠন বাজুসের উপর বেশকিছু দায়িত্ব দেওয়া করা হয়েছে।

এর মধ্যে বিএফআইইউর সহায়তায় এর সদস্যদের মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন সংক্রান্ত ঝুঁকি নিরূপণ, তাদেরকে বিএফআইইউর নির্দেশনা প্রদান এবং সন্দেহজনক লেনদেন বা সন্দেহজনক কার্যক্রম চিহ্নিতকরণে সহায়ক গাইডলাইন ও ফিডব্যাক প্রদান করা অন্যতম।

এছাড়াও সদস্যদের সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণ কর্মশালা ও অন্যান্য কর্মসূচি আয়োজন করাসহ এসংক্রান্ত আইন, বিধিমালা ও বিএফআইইউ এর নির্দেশনা পরিপালনে বিএফআইইউকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.