প্রধানমন্ত্রী যশোরে জনসভায় বক্তৃতা দেবেন আজ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোর জেলা স্টেডিয়ামে এক জনসভায় বক্তৃতা দেবেন আজ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ এই জনসভার আয়োজন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভা উপলক্ষ্যে, যশোর এখন একটি উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। জেলার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণের মাঝে উৎফুল্লতা বিরাজ করছে।

আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার এই জনসভাকে কেন্দ্র করে শুধুমাত্র যশোরের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই নয়, বরং গোটা দক্ষিনাঞ্চলের জনগণের মাঝে উৎসাহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে।

যশোর স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সাংবাদিকদের কাছে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ওই দিন যশোর ও এর আশপাশের জেলাগুলোর কোন মানুষ বাড়িতে বসে থাকবে না। তারা সকলেই প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বক্তৃতা শুনতে জনসভায় আসবেন। এই অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ শেখ হাসিনার জনসভায় অংশ নিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন। এক সময়ে সন্ত্রাসবাদের জনপদ যশোর- আওয়ামী লীগের শাসন আমলে এখন উন্নয়নের জনপদে পরিণত হয়েছে। আর তাই আগামীকাল এই জনসভাকে কেন্দ্র করে যশোর জনসমুদ্রে পরিণত হবে। বস্তুতপক্ষে, আগামীকালের এই জনসভায় যশোর বিএনপি-জামাত অপশক্তির পাশাপাশি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে। কারণ তারা এখনো সক্রিয় আছে।

আওয়ামী লীগের ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জনসভা প্রস্তুতির চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং তারা প্রধানমন্ত্রীর এই জনসভাকে সামনে রেখে ব্যাপক মাইকিং ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। করোনার কারণে প্রধানমন্ত্রী প্রায় তিন বছর পর, এই প্রথম ঢাকার বাইরে কোন জনসভায় অংশ নিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর পোস্টার ও ব্যানানের পাশাপাশি রঙিন খিলান ও তোরণ দিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক সজ্জিত করা হয়েছে। নেতারা প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানকে স্বাগত জানাতে দাড়াটানা মোড়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, গারিবশাহ্ রোড ও অন্যান্য এলাকা ব্যানার, বেলুন, ফেস্টুন ও পোস্টার দিয়ে সজ্জিত করেছে।

আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জানান, প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক দলীয় ফোরাম মিটিংয়ে এখন থেকে দলকে আরো বেশি সময় দেয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন জেলা সফর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। আর এর অংশ হিসেবে, প্রথম জনসভাটি যশোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তারা বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর, এখানে এক জনসভায় বক্তৃতা করেন। ৫০ বছর পর, তাঁর বড় মেয়ে শেখ হাসিনা একই স্থানে জনসভায় বক্তৃতা দেবেন।

জনসভার মঞ্চটি নৌকার আদলে নির্মাণ করা হয়েছে। পাঁচ বছর আগে, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর যশোর ঈদগাহ মাঠে শেখ হাসিনা নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দেন।
যশোরে এই জনসভার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রধানের দেশব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু হবে। এরপর তিনি ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পলো গ্রাউন্ডে এবং ৭ ডিসেম্বর কক্সবাজারের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দলীয় সভাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে জনসভায় ভাষন দেবেন। এসব জনসভায়, দলীয় সভাপতি তাঁর ভাষণে জনগণের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদেরও নতুন বার্তা দেবেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এএফএম বাহাউদ্দিন নাসিম সাংবাদিকদের বলেন, যশোরে শেখ হাসিনার জনসমাবেশের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তাঁকে স্বাগত জানাতে এ অঞ্চলের সর্বস্তরের জনগণ প্রস্তুত রয়েছে। করোনার কারণে আওয়ামী লীগ প্রধান ২৭ মাস পর, ঢাকার বাইরে কোন জনসভায় অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘জনসভায় বিএনপি-জামাতের জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধেও সবাইকে সতর্ক করা হবে। এছাড়াও জনগণকে মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানানো হবে।’

যশোর জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জানান, এই জনসভায় ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটানোর লক্ষ্য তাদের রয়েছে। যশোরের বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের উপজেলাসহ খুলনা বিভাগের ১০টি জেলা থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এই জনসভায় যোগ দেবে।

সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমির প্রেসিডেন্ট প্যারেডে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী বিএএফ একাডেমিতে পাসিং আউট কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করবেন। বিকেলে, আওয়ামী লীগ সভাপতি যশোর জেলা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর ও জনসভাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাসস

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.