ইউক্রেনের অর্থডক্স চার্চে রাশিয়ার গুপ্তচর!

ইউক্রেনের পেচারস্ক লাভরা অর্থডক্স চার্চে তল্লাশি চালিয়েছেন ইউক্রেনের গোয়েন্দা বিভাগ (এসবিইউ) । কিয়েভের এই শতাব্দীপ্রাচীন গির্জাটি বরাবরই রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। অভিযোগ, চার্চটি সম্প্রতি রাশিয়ার হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছে। এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই মঙ্গলবার আচমকাই চার্চে অভিযান চালান গোয়েন্দারা।

একাদশ শতকে চার্চটি তৈরি হয়েছিল। কিয়েভের দক্ষিণপ্রান্তে অবস্থিত চার্চটি রাশিয়ার অধীনে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাগ হলেও অর্থডক্স চার্চের নিয়ন্ত্রণ ছিল রাশিয়ার অর্থডক্স চার্চ কর্তৃপক্ষের হাতে। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর চার্চটি ক্রেমলিনের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে বলে চার্চের দাবি। কিন্তু এসবিইউ-র বক্তব্য, প্রকাশ্যে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও চার্চটি এখনো রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার গুপ্তচরদের কার্যকলাপের অন্যতম কেন্দ্র এই চার্চটি। সে জন্যই সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে।

তল্লাশি অভিযানের পর ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ একটি বিবৃতি জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘ইউক্রেন চায় না ইউনেস্কো ওয়ার্লিড হেরিটেজ এই চার্চ রাশিয়ার অভিযানের কেন্দ্র হয়ে উঠুক। চার্চটিকে রাশিয়া অস্ত্রভাণ্ডার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে না।’

যদিও রাশিয়া এই তল্লাশি অভিযানের কড়া সমালোচনা করেছে। রাশিয়ান অর্থডক্স চার্চের মুখপাত্র ভ্লাদিমির লেগোয়দা বলেছেন, ‘ইউক্রেনের ধার্মিক মানুষের জন্য এ এক চরম আঘাত। আমাদের একটাই প্রার্থনা, এই তল্লাশি অভিযান বন্ধ হোক। ইউক্রেনের মানুষ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।’

অন্যদিকে খেরসন ছেড়ে চলে গেছে রাশিয়ার সেনা। সেখানে পুনর্দখলের উল্লাসে মেতেছেন ইউক্রেনপন্থি যোদ্ধারা। রাশিয়ার ফেলে যাওয়া বিভিন্ন পোস্টার এবং সাইন মুছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। রাশিয়া যে সাইন এবং পোস্টারগুলি রেখে গেছিল, তাতে লেখা ছিল, ‘আমরা রাশিয়াকে ভালোবাসি’, ‘রাশিয়ার পাসপোর্ট এবং পেনশন ব্যবস্থা ব্যবহার করুন’। সেই সাইনগুলিকে খুলে ফেলে ইউক্রেনপন্থি সাইন এবং পোস্টার লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে।

খেরসনের এক বাসিন্দা বলেছেন, ইউক্রেনের সেনা সেখানে ঢোকার পরেই পোস্টারগুলির প্রিন্টআউট সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলোতে শুরু করে। দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে গোটা খেরসনে।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মঙ্গলবার ফের রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, রাশিয়া ঠান্ডাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। বেসামরিক মানুষকেও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। সে কারণেই তারা ক্রমাগত ইউক্রেনের গ্যাস এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিতে হামলা চালাচ্ছে। গ্যাস এবং বিদ্যুৎ না থাকলে ঠান্ডায় মৃত্যু হবে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষের। রাশিয়া তা-ই চাইছে। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.