করোনা পরবর্তী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই সংকট কাটাতে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প নেই। এলক্ষ্যে শিল্প ঋণের চেয়ে কৃষি ঋণ বিতরণে গুরুত্ব দেওয়ার তাগিদ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন এসব তথ্য জানান।
এসময় এবিবি চেয়ারম্যান বলেন, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকসহ সকলেই কৃষি ঋনের উপর আরও গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। কারণ প্রান্তিক পর্যায়ের ঋণে ক্ষতির পরিমাণও অনেক কম।
এদিন আরও জানানো হয়, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলে জনসাধারণের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কৃষি নীতিমালায় কিছু বিষয় সংযোজন করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে হাঁস পরিপালনের জন্য ঋণ নীতি; চিয়া বীজ, ত্বীন ফল, সুগার বিট চাষে ঋণ নীতি; ভিয়েতনামি হাইব্রিড নারিকেল, কফি ও সুইট কর্ন চাষের ঋণ নীতি। এছাড়া সামুদ্রিক শৈবাল চাষ ও মৎস্য খাতে গলদা চিংড়ি, দলবদ্ধভাবে ঋণ গ্রহণ ও একর প্রতি ফসল উৎপাদনে কৃষি ঋণ নীতি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, কৃষি ঋণ পেতে ভোগান্তি এড়াতে কৃষকদের জন্য ১০ টাকার ব্যাংক হিসাবে ঋণ চলে যাচ্ছে। তারপরও কোনো অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরে ৩১ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ঘোষণা করেছে। এই লক্ষ্যমাত্রা গত অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি।
এর আগে গত অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। তবে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হয় ২৮ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমত্রার চেয়ে বেশি।
গত অর্থবছরের বিতরণকৃত ঋণের ৩৩ লাখ ৪ হাজার ৮১১ জন কৃষি ও পল্লী ঋণের সুবিধা নিয়েছেন। এর মধ্যে ১৭ লাখ ৯৭ হাজার নারী নিয়েছেন ১০ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা। আর চর, হাওরসহ অনগ্রসর এলাকায় কৃষি ঋণ বিতরণ হয়েছে ১৯ কোটি টাকা।
এদিন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আওলাদ হোসেন চৌধুরী ও জিএম আবুল কালাম আজাদসহ কৃষি ঋণ বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.