ডলার সংকটে রিজার্ভ আরও কমলো

রেমিট্যান্সের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে দেশে ডলার সংকট আরও বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি পরবর্তীতে ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। একই সঙ্গে কমেছে রফতানি আয়। বাজার নিয়ন্ত্রণে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে রিজার্ভ কমে দাড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করলে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার।

জানা যায়, নভেম্বরের শুরুতে ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিলো। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩৪ দশমিক ২১ বিলিয়ন ডলারে। যা দিয়ে প্রতি মাসে আট বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৪ মাসের আমদানি বিল পরিশোধ করা যাবে। এদিকে রেমিট্যান্সের পরিমাণও কমে আসছে। চলতি মাসে ১০৫ কোটি ৯৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে প্রবাসীরা। এতে ডলার সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করছে।

চলতি মাসের প্রথম ১৮ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে ১৮ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠায় প্রবাসীরা। আর বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৮৪ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। এসময় বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৭ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে দুই কোটি ৩৯ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স।

এ সময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এরপর অগ্রণী ব্যাংক, ডাচ্–বাংলা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা।

এদিকে আইএমএফ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। আইএমএফ বলছে, রিজার্ভ থেকে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই অর্থ ব্যবহার করে বিভিন্ন তহবিল গঠন করা হয়েছে। এসব অর্থ বাংলাদেশের রিজার্ভে দেখানো হচ্ছে।

তাই রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) সরবরাহ করা ৭ বিলিয়ন এবং শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০ কোটি ডলার দেশের রিজার্ভে দেখানো যাবে না। এছাড়া গ্রিন ট্রান্সফরমেশন ফান্ড (জিটিএফ) ২০ কোটি, লং টার্ম ফিন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি (এলটিএফএফ) তহবিলে ৩ কোটি ৮৫ লাখ, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানকে ৪ কোটি ৮০ লাখ এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) আমানতও রিজার্ভে দেখানো যাবে না।

রেমিট্যান্স বাড়াতে ইতিমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৈধ উপায়ে আসা রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, প্রবাসীদের সিআইপি সম্মাননা, অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়াসহ নানা উদ্যোগ নেয় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। তাছাড়া রিজার্ভ ও রেমিট্যান্স বাড়াতে হুন্ডি প্রতিরোধের নতুন কৌশলে নিয়েছে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.