সুদ মওকুফের নতুন সিদ্ধান্ত জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক

ব্যাংকগুলো বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ঋণের সুদ মওকুফ করতে পারে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগের মাধ্যমে নিরীক্ষা ও হেড অব ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্সের (এইচআইসিসি) মতামত গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে দেশের কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে পূর্বের নির্দেশনা অধিকতর স্পষ্টীকরণ ও এর যথাযথ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সার্কুলারে বলা হয়, অপরিহার্য ক্ষেত্রে তহবিল ব্যয় আদায়ের শর্ত শিথিলের যৌক্তিকতা নিশ্চিতকরণে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগের মাধ্যমে নিরীক্ষা ও হেড অব ইন্টারনাল কন্ট্রোল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স (এইচআইসিসি) এর মতামত গ্রহণ করতে হবে।

এর আগেও এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছিলো, নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণ যেমন, ঋণগ্রহীতার মৃত্যু, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, নদীভাঙন, দুর্দশাজনিত কারণে বা বন্ধ প্রকল্পের ব্যাংকঋণের সুদের সম্পূর্ণ অংশ বা অংশবিশেষ মওকুফ করে দিতে পারে ব্যাংকগুলো। তবে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, এসব বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় না নিয়ে ব্যাংকগুলো বিভিন্ন গ্রাহকের সুদ প্রায়ই মওকুফ করে দিচ্ছে। এতে সুদ মওকুফ সুবিধা পাওয়ার জন্য গ্রাহকদের মধ্যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংকের পাওনা পরিশোধে অনাগ্রহ সৃষ্টি হতে পারে, যা ব্যাংক খাতে সার্বিক ঋণ শৃঙ্খলার পরিপন্থী।

এসময় আরও বলা হয়, এ জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংকের পাওনা পরিশোধে গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি, সামগ্রিক ঋণশৃঙ্খলা বজায় রাখা ও গ্রাহকস্বার্থ সংরক্ষণে ব্যাংক খাতে ঋণের (ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে বিনিয়োগ) আরোপিত, অনারোপিতসহ সব ধরনের সুদ (ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে মুনাফা) মওকুফের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। তবে আগের সুদ মওকুফ সুবিধা নেওয়া গ্রুপের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হবে না।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বলা হয়, নতুন নিয়ম অনুযায়ী মূল ঋণ (আসল) মওকুফ করা যাবে না। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্ট ঋণ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণের সুদ মওকুফ করা যাবে না। ব্যাংকের আয় বিকলন (দেনা) করে সুদ মওকুফ করা যাবে না। ঋণের সুদ মওকুফ সুবিধা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে। তবে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল ঋণের সুদ মওকুফসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর অর্পণ করা যাবে। পাশাপাশি সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে ব্যাংকের তহবিল ব্যয় আদায় নিশ্চিত করতে হবে।

অর্থসূচক/এমএইচ/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.