অটোমোবাইল খাতের উন্নয়নে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের উন্নয়ন জরুরি: এফবিসিসিআই সভাপতি

নতুন নিয়ম অনুযায়ী শতভাগ মার্জিন দিয়েও ব্যাংক থেকে গাড়ি আমদানির জন্য কোন এলসি খুলতে পারছেন না আমদানিকারকরা। এতে গাড়ি আমদানি প্রায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত অটোমোবাইল বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির দ্বিতীয় সভায় এই অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা।

তারা বলেন, বিলাসপণ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় শতভাগ এলসি মার্জিনের আওতাভুক্ত হয়েছে গাড়ি আমদানি। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক অগ্রগতির বাস্তবতায় গাড়ি এখন মানুষের প্রয়োজনীয় পণ্যের পরিণত হয়েছে। তাছাড়া সড়কপথে পণ্য পরিবহনে ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান ছাড়া অন্যকোন বিকল্প নেই। করোনা মহামারিকালীন ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানের কারণেই দেশজুড়ে পণ্যের সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক ছিল। তাই এসব বিবেচনায় গাড়িকে বিলাসী পণ্যের আওতার বাইরে রাখার আহ্বান জানান আমদানিকারকরা।

বিশ্বজুড়ে পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় ইলেকট্রিক গাড়িকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে নানা প্রণোদনা দিচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার। কিন্তু বাংলাদেশে এ ধরনের গাড়ির নিবন্ধন এখন বন্ধ হয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে এরইমধ্যে একটি বিদেশী কোম্পানি ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। নিবন্ধন সমস্যার সমাধান না হলে এই বিনিয়োগ বিফলে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হবে। আর একটা বিদেশী বিনিয়োগ ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে অন্য কোন বিদেশী প্রতিষ্ঠান এই খাতে বিনিয়োগ করতে আসবে না।

অটোমোবাইল শিল্পের উন্নয়নে এই ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের উন্নয়নের তাগিদ দেন সভাপতি। তিনি বলেন, আজকে যারা গাড়ি সংযোজন করছে, ভবিষ্যতে তারাই গাড়ি তৈরি ও রপ্তানি করবে। এজন্য নীতিমালা প্রণয়নে কাজ করতে হবে।

এফবিসিসিআইর সহসভাপতি ও কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ মোঃ হাবীব উল্লাহ ডন বলেন, বৈশ্বিক সংকটের কারনে শতভাগ মার্জিন দিয়ে হলেও আমরা সরকারের সাথে থাকছি। তারপরেও বিভিন্ন কাগজপত্রের নামে ব্যাংকগুলো গাড়ি আমদানিতে নিরুৎসাহিত করে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শুল্ক বাধা দূর করে বিভিন্ন দেশের মত অটোমোবাইল শিল্পের উন্নয়নে সরকারি প্রণোদনাও আশা করেন মোঃ হাবীব উল্লাহ ডন। এছাড়া বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে শুল্ক মওকুফ করে রেজিস্ট্রেশনে সুষ্ঠু নীতিমালা তৈরির আহ্বান জানান তিনি। বিআরটিএ’র কমিটিতে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এফবিসিসিআইর প্রতিনিধি থাকার পক্ষে মত দিয়ে সহসভাপতি হাবীব উল্ল্যাহ ডন বলেন, এর ফলে ব্যবসাবান্ধব ও বাস্তবসম্মত নীতি প্রণয়ন নিশ্চিত হবে।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও রানার অটোমোবাইলস লিঃ এর চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান।  তিনি বলেন, শতভাগ এলসি মার্জিনে আমাদের কোনো সমস্যা ছিলোনা, কিন্তু পুঁজি বিনিয়োগ ও তারল্য ঘাটতির কারনে প্রণোদনা প্যাকেজ জরুরি।

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে মটরসাইকেল ক্রয়ের আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকার নিয়ম বাতিল, বিআরটিএ কর্তৃক কম সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তি, ইলেকট্রনিক যানের এইচএস কোড নির্দিষ্টকরণ, থ্রি-হুইলারের সরকারি নিবন্ধন ও ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা প্রণয়নে অটোমোবাইল খাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সংযুক্ত করার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।

সভা্য় আরো উপস্থিত ছিলেন, এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, পরিচালক রেজাউল করিম রেজনু, সিআইপি, এমজিআর নাসির মজুমদার, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, ইকবাল শাহরিয়ার, আসলাম সেরনিয়াবাত, আবু হোসেন ভুঁইয়া (রানু), আক্কাস মাহমুদ, কমিটির কো-চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, আবদুল হক, তাসকিন আহমেদ, মাহবুবুল হক চৌধুরী বাবুরসহ অটোমেবাইল খাতের ব্যবসায়ীবৃন্দ।

অর্থসূচক/ এইচএআই

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.