৫৭ জেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ আজ। দেশের ৫৭টি জেলা পরিষদে সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে টানা দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে। ভোট হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে)। এ নির্বাচনে কারচুপি বন্ধে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
তিনটি পার্বত্য জেলা ছাড়া আজ দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভোলা ও ফেনী জেলা পরিষদে চেয়ারম্যানসহ সব পদের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এবং আদালতের নির্দেশে নোয়াখালী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের নির্বাচন স্থগিত থাকায় এ চারটি ছাড়া বাকি ৫৭টি জেলা পরিষদের ভোট হচ্ছে আজ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ভোট চলাকালে গাইবান্ধার উপ-নির্বাচনের মতো যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়, সেজন্য কঠোর অবস্থানে ইসি। প্রতিটি ভোটকক্ষে থাকছে সিসি ক্যামেরা। সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও আনসার বাহিনী। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বসে সিসি ক্যামেরায় নির্বাচন মনিটরিং সেল থেকে ভোট পর্যবেক্ষণ করবে ইসি। এ জন্য উচ্চপর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার আইন অনুসারে সংশ্লিষ্ট জেলার অধীনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা এ নির্বাচনের ভোটার। মোট ভোটার ৬৩ হাজার ১৫৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৮ হাজার ২৩৬ জন এবং নারী ১৪ হাজার ৯২৩ জন।
নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী আজকের জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী রয়েছেন ৯২ জন, সাধারণ সদস্য পদে এক হাজার ৪৮৫ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৬০৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে আগেই ২৬ জন চেয়ারম্যান, ৬৯ জন সাধারণ সদস্য এবং ১৯ জন সংরক্ষিত নারী সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আজকের নির্বাচনে কেন্দ্র ৪৬৫টি এবং ভোটকক্ষ ৯৩১টি।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য ৯৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা ভোটগ্রহণের পরের দিন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটগ্রহণকালে সব কেন্দ্রে থাকবে সাতজন করে ফোর্স। এ ছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে মোবাইল বা স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং র্যাবের মোবাইল বা স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকছে। ১৯ জেলায় দুই প্লাটুন ও অন্যান্য জেলায় এক প্লাটুন করে বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালনে করছে।
দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় বারের মত জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয় গত ২৩ আগস্ট। পার্বত্য তিন জেলা বাদে দেশের ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনের লক্ষে এ তফসিল ঘোষণা করা হয়। দেশে ১৯৮৯ সালে তিন পার্বত্য জেলায় একবারই সরাসরি নির্বাচন হয়েছিল। আর কোনো জেলা পরিষদ নির্বাচন হয়নি। এরপর ১৯৮৮ সালে এইচ এম এরশাদ সরকারের সময় প্রণীত আইনে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে সরকার কর্তৃক নিয়োগ দেওয়ার বিধান ছিল। পরবর্তীতে আইনটি কার্যকারিতা হারায়। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারে এসে ২০০০ সালে নতুন আইন করে জেলা পরিষদ আইন প্রণয়ন করে। সে আইনটি মাঝে ফের অকার্যকর থাকে। পরবর্তীতে নবম সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এলে ২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ৬১ জেলায় নিজ দলের নেতাদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় আওয়ামী লীগ। তাদের মেয়াদ শেষ হলে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো দেশের ৬১ জেলায় নির্বাচন দেয়া হয়। সে সময় ১৯ জন চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
অর্থসূচক/এএইচআর



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.