বিদ্যুতের দাম বাড়ছে না

দেশে নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) কমিশন অনলাইনের অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে থেকে এই ঘোষণা দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, সদস্য মকবুল ই ইলাহি, সদস্য বজলুর রহমান, সদস্য আবু ফারুক, সদস্য মো. কামরুজ্জামান, সচিব খলিলুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জালিল বলেন, ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ছিল। আমরা এর মধ্যে অনেকবার বসেছি। আমরা বিচার-বিশ্লেষণ করেছি। আজকে শেষদিনে আমরা ঘোষণা করলাম।

এর আগে গত ১৮ মে পিডিবির বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি করে কমিশন। নিয়ম অনুযায়ী গণশুনানির পর ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। গণশুনানির ৯০ কার্যদিবসের সময়সীমা শেষ হবে আগামী ১৪ অক্টোবর। তাই আজ ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

বিইআরসি সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুতের পাইকারি দর ইউনিট প্রতি ৫ টাকা ১৭ পয়সা নির্ধারণ করে।

জানা যায়, পিডিবি দিনের বেলা ৯ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সস্তা উৎস থেকে পাচ্ছে। এর মধ্যে কম্বাইন্ড সাইকেলে ৫ হাজার ৬৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় প্রতি ইউনিট আড়াই টাকা। অন্যদিকে ২৪০ মেগাওয়াটের সিম্পল সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতি ইউনিটের উৎপাদন ব্যয় ৩ টাকা ৭০ পয়সা। প্রতিদিন এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ থেকে এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এছাড়া ভারত থেকে ইউনিটপ্রতি সাড়ে ৫ টাকা দরে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়। এদিকে কয়লা ও কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসে। এরমধ্যে কাপ্তাইয়ের প্রতি ইউনিটের উৎপাদন খরচ এক টাকারও নিচে পড়ার কথা। আর কয়লায় উৎপাদন ব্যয় সাত টাকার কাছাকাছি। এখন দিনে ১০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ পিডিবি উৎপাদন করে না। অন্যদিকে রাতে ১২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করা হয়। এর মধ্যে তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে গড়ে ২৩০০ মেগাওয়াট পেলেই হয়। তেল থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের দাম পড়ে ১৫ টাকা ইউনিট।

গত মঙ্গলবার একনেক সভায় সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন তিনি।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সম্প্রতি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বেড়েই চলেছে। শীতে আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সবকিছু বিবেচনায় কোনও জ্বালানির দাম কমানোর সুযোগ নেই। তবে সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

গত ১৮ মে বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য বাড়াতে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে প্রায় ৬৬ শতাংশ দাম বাড়ানোর আবেদন করে পিডিবি। সে সময় ভর্তুকি ছাড়া ৫৮ শতাংশ দাম বাড়ানো এবং ভর্তুকি দিলে দাম না বাড়ানোর সুপারিশ করে বিইআরসি গঠিত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.