ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃতদের আমরণ অনশনের হুমকি

ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের পর সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১৬ নেত্রীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন বহিষ্কৃতরা।

সোমবার কলেজ গেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন তারা। এ সময় তারা তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করা হলে ধানমন্ডিতে অবস্থিত আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ের আমরণ অনশনের হুমকি দেন।

বহিষ্কৃতদের অভিযোগ, নির্যাতনের বিচারের পরিবর্তে উল্টো বহিষ্কার করা হয়েছে। যারা নির্যাতন করেছে তারা বহাল তবিয়তে আছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় অপরাধ করেও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও তাদের অনুসারীরা পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

আমরণ অনশনে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ১ নম্বর সহসভাপতি সোনালি আক্তার বলেছিলেন, সোমবার দুপুর থেকে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে অনশন শুরু হবে।

রোববার মধ্যরাতে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত এবং ১৬ নেত্রীকে বহিষ্কার করা হয়। স্থায়ী বহিষ্কার হওয়াদের মধ্যে ১০ জন বর্তমান কমিটির সহসভাপতি, একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, একজন সাংগঠনিক সম্পাদক আর চারজন কর্মী।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। সেইসঙ্গে শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা উর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি, সাদিয়া জাহান সাথী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিন্তি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখি এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা, সূচনা আক্তারকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো। অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে এই বিশৃঙ্খলার সঙ্গে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে রোববার বিকেলে ইডেন কলেজের অডিটোরিয়ামের সামনে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার সংবাদ সম্মেলন চলাকালে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে কলেজ শাখার সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সহ-সভাপতি সুম্মিতা বাড়ৈসহ আহতদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। সেসময় একটি পক্ষ ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে ক্যাম্পাস থেকে বের না করা পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাবে বলে জানায়, আরেকটি পক্ষ শনিবারের ঘটনার ভুক্তভোগী পক্ষের অংশকে ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে অবস্থান করে।

এর আগে, শনিবার রাতে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার চাঁদাবাজি ও সিট বাণিজ্য নিয়ে গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেয়ায় কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে হল থেকে মারধর করে বের করে দেয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এরপর ওইদিন রাত ১১টার দিকে মুখোমুখি অবস্থান নেয় কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ। কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে নির্যাতনের অভিযোগে সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা, সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা ও তাদের অনুসারী সমর্থকদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.