সাজেদা চৌধুরী আর নেই

সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।

সাজেদা চৌধুরী বেশ কিছুদিন ধরেই ডিমেনসিয়া রোগে ভুগছিলেন।তিনি নিকটাত্মীয়সহ পরিচিত কাউকেই চিনতে পারতেন না। উচ্চরক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত সমস্যা নিয়ে গত ২৮ আগস্ট সিএমএইচে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।

তিনি ৩ ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক জানিয়েছেন।এ ছাড়া বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মরদেহ রাতে সিএমএইচেই রাখা হবে।সোমবার সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সাজেদা চৌধুরীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।এরপর বাদ জোহর তার নির্বাচনী এলাকা নগরকান্দায় হবে দ্বিতীয় জানাজা। বাদ আসর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সাজেদা চৌধুরী ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলাতে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ এবং মা সৈয়দা আছিয়া খাতুন। শিক্ষাজীবনে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার স্বামী রাজনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী গোলাম আকবর চৌধুরী।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বিপর্যয়ের মুখে পড়ে আওয়ামী লীগ।সেই সংকটময় মুহূর্তে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন সাজেদা চৌধুরী। ১৯৭৬ সালে সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯২ থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এর আগে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত সাজেদা চৌধুরী মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

সাজেদা চৌধুরী একাধিবার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর সাজেদা চৌধুরীকে প্রথমবার জাতীয় সংসদের উপনেতা করা হয়। এরপর দশম ও একাদশ সংসদেও তিনি উপনেতার দায়িত্ব পান।

তিনি ১৯৭৪ সালে গ্রামীণ উন্নয়ন ও শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য ইউনেস্কো ফেলোশিপপ্রাপ্ত হন এবং একই সময়ে তিনি বাংলাদেশ গার্ল-গাইড অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় কমিশনার হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মানসূচক সনদ সিলভার এলিফ্যান্ট পদক লাভ করেন। তিনি ২০০০ সালে আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক ওমেন অব দি ইয়ার নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.