চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম মাসে বড় বাণিজ্য ঘাটতির শিকার হয়েছে দেশ। রপ্তানি আয়ের তুলনায় অনেক বেশি টাকার পণ্য আমদানি হওয়ায় জুলাই মাসে এই বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে। একইসঙ্গে চলতি হিসাব ও সামগ্রিক লেনেদেনেও ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ।
আজ রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্য (Balance of Payment-BOP) সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, জুলাই মাসে দেশের আমদানি ও রপ্তানি-দুটোই বেড়েছে। তবে রপ্তানির চেয়ে আমদানি বেড়েছে অনেক বেশি। আর তাতেই এমন বড় ঘাটতি হয়েছে বৈদেশিক বাণিজ্যে।
অর্থবছরের প্রথম মাসে রপ্তানি বেড়েছে ১৪ শতাংশ। অন্যদিকে আমদানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। এ সময়ে ৫৮৬ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। এর বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে ৩৮৮ কোটি ডলারের পণ্য। এতে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি হয়েছে ১৯৮ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ঘাটতি চেড়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। গত বছরের জুলাই মাসে ১৩৬ কোটি ডলার ঘাটতি হয়েছিল বৈদেশিক বাণিজ্যে।
দেশীয় মুদ্রায় জুলাই মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৮১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা (প্রতি এক ডলার ৯৫ টাকা ধরে)।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখি থাকায় আমদানি ব্যয় অনেক বেড়েছে। কিন্তু সে অনুপাতে রপ্তানি না হওয়ায় বেড়েছে বাণিজ্য ঘাটতি। এছাড়া এই বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির পেছনে ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিং বেড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও থাকতে পারে। আমদানির ক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য প্রকৃত মূল্যের চেয়ে বাড়িয়ে দেখানো হলে তাকে ওভার ইনভয়েসিং (Over Invoicing) এবং রপ্তানির সময় পণ্যের মূল্য প্রকৃত রপ্তানি মূল্যের চেয়ে কমিয়ে দেখানোকে আন্ডার ইনভয়েসিং (Under Invoicing) বলে। অর্থ পাচারের উদ্দেশ্যে অসাধু অনেক ব্যবসায়ী ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের আশ্রয় নিয়ে থাকে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাধারণত জাতীয় নির্বাচনের আগে অর্থপাচারের পরিমাণ বেড়ে যায় বলে ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিংও বেড়ে যায়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এমনটি হয়ে থাকতে পারে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.