আলজেরিয়ায় দাবানল: নিহত ৩৮, আহত ২ শতাধিক

খরা ও শুকনো আবহাওয়ার প্রভাবে উত্তর আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী শহর এল তার্ফের টোঙ্গা হ্রদের তীরবর্তী একটি সাফারি পার্কে দাবানল শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে এই দাবানল শুরু হয়। এতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৮ জন, আহত হয়েছেন ২শরও অধিক মানুষ।

ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আগুন লাগার মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তা ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় একজন প্রত্যক্ষদর্শী টেলিফোনে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আগুন লাগার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তা টর্নেডোর মতো পার্কে ছড়িয়ে পড়ে। যারা হতাহত হয়েছেন তারা সবাই দর্শনার্থী ছিলেন। এত দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়েছে যে অধিকাংশই নিরাপদ স্থানে সরার কোনো সময়ই পাননি।’

এমনকি সাফারি পার্কের সড়ক দিয়ে দর্শনার্থীদের একটি বাস যাচ্ছিল, সেটিও দাবানলের কবলে পড়ে। ওই বাসের ৮ জন যাত্রী জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যান।

আলজেরিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দাবানল নেভানোর চেষ্টা করছেন, কিন্তু এখনও তা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বর্তমানে টোঙ্গার ওই সাফারি পার্ক ও তার আশপাশের তাপমাত্রা প্রায় ৪৮ ডিগ্রি।

বৃহস্পতিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী আয়মান বিন আব্দুররহমান টোঙ্গা হ্রদ ও তার আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

এদিকে আলজেরিয়ার দক্ষিনাঞ্চলীয় শহর আহরার বনাঞ্চলেও বুধবার শুরু হয়েছে দাবানল। বনাঞ্চলের কাছে একটি হাসপাতাল আছে। সেই হাসপাতালে ভর্তি ১০০ নারী ও ১৭ জন সদ্যজাত শিশুসহ সব রোগীকে ইতোমধ্যে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বনাঞ্চলের আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকেও প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছে মানুষ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ক বেশ কিছু চিত্র ও ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে।

উষ্ণ আবহাওয়ার দেশ আলজেরিয়ায় অবশ্য দাবানল বিরল কোনো ব্যাপার নয়। গত বছর দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে এই দুর্যোগের কবলে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৯০ জন মানুষ এবং দেশটির উত্তরাঞ্চলের ১ লাখ হেক্টর জমির বনাঞ্চল ও ফসল পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

তবে চলতি আগস্ট মাসেই আলজেরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় এ পর্যন্ত ১০৬টি দাবানল দেখা দিয়েছে। এতে ৮০০ হেক্টর বনাঞ্চল ও ১৮০০ হেক্টর জমির ফসল ধ্বংস হয়েছে।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.