ক্রাইমিয়ায় বিস্ফোরণে রাশিয়ার ৯ বিমান ধ্বংস

রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রাইমিয়ায় রাশিয়ার একটি সেনাঘাঁটির অদূরে বিস্ফোরণ হয়েছিল বলে সোমবার রাতে জানিয়েছিল ইউক্রেন এবং রাশিয়া। ইউক্রেন বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেনি। অন্যদিকে রাশিয়া জানিয়েছিল, তেল এবং বারুদের সংযোগে ঘটনাস্থলে বিস্ফোরণ হয়েছিল। মঙ্গলবার ইউক্রেন দাবি করেছে, ওই বিস্ফোরণে রাশিয়ার নয়টি যুদ্ধ বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও রাশিয়া তা মানতে চায়নি। তাদের দাবি, বিস্ফোরণে তাদের যুদ্ধবিমান বা যুদ্ধাস্ত্রের কোনো ক্ষতি হয়নি।

সোমবার জানা গেছে ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। রাশিয়া জানিয়েছিল, সেনাঘাঁটির অদূরে দুর্ঘটনাটি ঘটে। বিস্ফোরণের জন্য তারা ইউক্রেনকে দায়ী করেনি। অন্যদিকে ইউক্রেনও বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেনি। কিন্তু ইউক্রেনের বক্তব্য এবং মনোভাবে বিশেষজ্ঞদের অনেকের ধারণা, এই বিস্ফোরণের পিছনে ইউক্রেনের হাত আছে। সেনাঘাঁটিতে আক্রমণ হয়েছে বলে রাশিয়াও ইউক্রেনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছে না।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন পরেই রাশিয়া সতর্ক করে বলেছিল, ইউক্রেন ক্রাইমিয়ায় আক্রমণ করলে রাশিয়া কিয়েভে থিঙ্কট্যাঙ্কের দপ্তরে আক্রমণ চালাবে। এতদিন ক্রাইমিয়ার ভিতরে আক্রমণ চালানোর অস্ত্রও ইউক্রেনের হাতে ছিল না। কিন্তু এখন তাদের কাছে মাঝারি পাল্লার মিসাইল আছে। ফলে আক্রমণ করাও অনেক সহজ হয়ে গেছে। সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার দৈনিক ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তারা ইউক্রেন পুনর্দখল করতে চায়। তার এই বক্তব্যের পর রাশিয়া কী করে, সে দিকেই তাকিয়ে বিশেষজ্ঞরা।

ইউক্রেনের সেনা সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, শীতের আগে যুদ্ধ শেষ করার কৌশল নিয়েছেন জেলেনস্কি। অগাস্টে ছয় মাসে পড়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল রাশিয়া। ফের শীত আসার সময় হয়েছে। ইউক্রেনের আশঙ্কা, রাশিয়া শীত পর্যন্ত যুদ্ধ টানতে চাইছে। তারা থার্মাল প্লান্টগুলি ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। রাশিয়া সক্ষম হলে শীতে কার্যত ঠান্ডায় মারা যাবেন ইউক্রেনবাসী। ইউক্রেন চায় ঠান্ডার আগেই যুদ্ধ শেষ করতে। চলতি সপ্তাহের গোড়ায় জেলেনস্কির বার্তাতেও সে কথা প্রতিফলিত হয়েছে। ইউক্রেনের দাবি, থার্মাল প্লান্ট ধ্বংস করার কথা প্রকাশ্যেই জানিয়েছিল রাশিয়া। তবে রাশিয়া সেকথা স্বীকার করতে চায়নি।

ঝাপোরিজ্ঝিয়া পরমাণু কেন্দ্র নিয়ে বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মস্কো এই বৈঠক ডাকার অনুরোধ করেছিল। বৃহস্পতিবারই বৈঠকটি হতে পারে।

ইউক্রেনের অভিযোগ, রাশিয়ার সেনা ওই পরমাণু প্রকল্পের ভিতর থেকে আক্রমণ চালাচ্ছে। কিন্তু ইউক্রেন পরমাণু কেন্দ্র বলে পাল্টা আক্রমণ চালাতে পারছে না। সম্প্রতি অবশ্য ওই পরমাণু কেন্দ্রের বাইরের অংশ মিসাইল আক্রমণ হয়েছিল। যার জেরে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। একটি রিঅ্যাক্টরও বন্ধ করে দিতে হয়েছে। জাতিসংঘ বলেছিল, ওই প্রকল্পে আক্রমণ আত্মহত্যার শামীল। ইউক্রেনের দাবি, এখনো রাশিয়ার সেনা ওই প্রকল্প দখল করে বসে আছে। কীভাবে পরমাণু কেন্দ্রটি বাঁচানো যায় এদিনের বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ঝাপোরিজ্ঝিয়ার পরমাণু কেন্দ্রটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.