৫০ রানে ৬ উইকেট নেই জিম্বাবুয়ের

শুরুতে ব্যাটিং করতে নেমে আফিফ-বিজয়ের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে কোনো রকমে আড়াইশো পেরিয়েছে বাংলাদেশ। এর জবাবে ২৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করছে জিম্বাবুয়ে। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে ওয়াইড দিয়ে জিম্বাবুয়ের রানের খাতা খুলতে সাহায্য করেন হাসান মাহমুদ। তবে একই ওভারের পঞ্চম বলে তাকুজওয়ানাশে কাইতানোকে লেগবিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই পেসার। এরফলে প্রথম ওভারেই উইকেটের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ।

প্রথম ওভারে উইকেট হারিয়ে শুরুতেই কিছুটা চাপে পড়েছিল রোডেশিয়ানরা। সেই চাপ আরও বাড়িয়েছেন তাদিওয়ানশে মারুমানি। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মিরাজের বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি। এর আগে ১ রান এসেছে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে। মাদেভারেকে ফিরিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অভিষেক উইকেট শিকার করলেন এবাদত হোসেন। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন তিনি। তাকে ফিরিয়ে রঙিন পোশাকে প্রথমবার ‘স্যালুট’ দিয়ে উইকেট উদযাপন করেছেন এই পেসার। এর পরের বলেই সিকান্দার রাজাকে বোল্ড করেন এবাদত। আগের দুই ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি করা রাজা ফিরেছেন গোল্ডেন ডাক মেরে।

নিজের প্রথম অভার করতে এসেই উইকেটের দেখা পেলেন তাইজুল ইসলাম। কাইয়াকে লেগবিফোরের ফাঁদে পেলে সাজঘরে ফেরান এই বাঁহাতি স্পিনার। আউট হওয়ার আগে ১০ রান এসেছে কাইয়ার ব্যাট থেকে। তার বিদায়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে স্বাগতিকরা। ৩১ রান তুলতেই সাজঘরে ফিরে গেছেন টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটার। এর পর আরও একজন আউট হলে ৫০ রানে ৬ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।

এর আগে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের মতোই শেষ ওয়ানডেতেও টস ভাগ্য সহায় হয়নি বাংলাদেশের। হারারেতে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ভালো শুরু পায় তারা। আগের ম্যাচের মতো এই ম্যাচে আগ্রাসীভাবে ব্যাট চালাননি তামিম ইকবাল। কিছুটা রয়ে-সয়ে খেলেন তিনি। আরেক ওপেনার এনামুল হক বিজয়ও খেলছেন একই ব্যাকরণ মেনে।

বাংলাদেশের ওপেনারদের এদিনও অস্বস্তিতে রাখেন এনগারাভা। তাকে খেলতে যে তামিম-বিজয়রা স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না, সেটা তাদের শরীরী ভাষা দেখেই বোঝা গেছে। অবশ্য আলগা বল পেলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বল-রানের খানিকটা সামঞ্জস্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন দুই ওপেনার। তবে পাওয়ার প্লে’তে ডট বলই বেশি খেলেছেন তারা। এদিন নবম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। বিজয়ের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান-আউট হয়েছেন আগের দুই ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করা তামিম। এ দিন ৩০ বলে তিন বাউন্ডারিতে ১৯ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।

তামিম ফেরার পর ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্তও। দশম ওভারে ব্র্যাড ইভান্সের করা প্রথম বলটি ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ওয়েসলি মাধেভেরের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরফলে গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন শান্ত। একই ওভারের চতুর্থ বলে ফিরে গেছেন মুশফিকুর রহিমও। থার্ড ম্যানে দুর্দান্ত এক ক্যাচে তার প্যাভিলিয়নে ফেরা নিশ্চিত করেন এনগারাভা। রানের খাতা খুলতে পারেননি এই অভিজ্ঞ ব্যাটারও। সবমিলিয়ে আট বলের মধ্যে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

৪৭ রানে তিন উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং বিজয়। এক প্রান্তে মাহমুদউল্লাহ ভুগতে থাকলেও অন্যপ্রান্তে ৪৮ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ সেঞ্চুরির তোলে নেন বিজয়। এই সিরিজে এটি তার দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। অপরদিকে ধীরগতিতে খেলতে থাকেন মাহমুদউল্লাহ। নিজের খেলা প্রথম ২৫ বলে মাত্র ৬ রান করেন তিনি। ২৬তম বলে নিজের প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান তিনি। তাদের ব্যাটে ২০.৪ ওভারে দলীয় শতকের দেখা পায় বাংলাদেশ।

সেঞ্চুরির দিকে ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন বিজয়। যদিও ব্যক্তিগত ৭৬ রানেই বিদায় নিয়েছেন তিনি। লুক জংউইয়ের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলটি বিজয়ের ব্যাটের কানায় লেগে অভিষিক্ত উইকেরক্ষক ক্লিভ মাদানদের হাতে চলে যায়। ৭৩ বলে খেলা ইনিংসে ছিল ছয়টি চার ও চারটি ছক্কার মার। আর মাহমুদউল্লাহ সাজঘরে ফেরার আগে ৬৯ বলে ৩৯ রান করেন।

শেষ দিকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন আফিফ। তার অপরাজিত ৮৫ রানের সুবাদে আড়াইশো রানের মাইলফলক স্পর্শ করে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান তোলে তামিম ইকবালের দল। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৩৮ রানে ২ উইকেট শিকার করেছেন লুক জংওয়ে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.