অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ১০ দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত

আমানতকারীদের অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যাংকসমূহকে চিহ্নিত করতে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই লক্ষ্যে ৪টি চলকের (শ্রেণিকৃত ঋণের মাত্রা, মূলধন পর্যাপ্ততা, ঋণ-আমানত অনুপাত এবং প্রভিশনিংয়ের পরিমাণ) উপর ভিত্তি করে ১০টি দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার  এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, এ কে এম সাজেদুর রহমান খান, বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম ও সহকারী মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদসহ কর্মকর্তারা।

দায়িত্ব নেয়ার পর এটাই গভর্নরের প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন। এর আগে গত ১২ জুলাই গভর্নর হিসেবে যোগ দেয়ার পর সেদিনই অনানুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। এ সময় গভর্নর বলেন, একটি ব্যাংক দুর্বল হলে অন্য ব্যাংকের ওপর এর প্রভাব পড়ে। তাই আমানতকারীদের কথা চিন্তা করে তাদের অর্থ যেন নিরাপদ থাকে, সেজন্যই দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য কোনো ব্যাংক বন্ধ বা দুর্বল করা নয়, সব ব্যাংককে সবল করা। এ জন্য যে চারটি ইনডিকেটর (শ্রেণিকৃত ঋণের মাত্রা, মূলধনের পর্যাপ্ততা, ঋণ-আমানত অনুপাত ও প্রভিশনিং) বিবেচনা করে ১০টি ব্যাংকের তালিকা করেছি। তাদের সাপোর্ট দেওয়া হবে। এ ব্যাংকগুলো আবার সবল হোক, ব্যবসায় ফিরে আসুক ডিভিডেন্ড দিক- আমরা সেটাই চাই। তারা ভালো হলে শেয়ারহোল্ডাররা উপকৃত হবেন। আমানতকারীদের অর্থ ফেরত নিশ্চিত হবে; দেশের অর্থনীতি ভালো হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি দুর্বল ব্যাংকগুলোর নাম বলতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য ব্যাংকগুলোকে উন্নতির মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা। দুর্বল ১০টি ব্যাংকের মধ্যে প্রথমটির (ন্যাশনাল ব্যাংক) সঙ্গে আলোচনায় বলেছি, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের কাজে পর্ষদ কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। এখানে চাপ বলে কিছু নেই। আইনের মধ্যে থেকে কাজ করছে কি না সেটাই প্রধান। ব্যাংকের সুশাসনের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের জিরো টলারেন্স নীতি বহাল থাকবে বলেও জানান তিনি।

দুর্বল ব্যাংকগুলোর সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘ওয়ান-টু-ওয়ান’ আলোচনা শুরু করছে। বিশেষ এ উদ্যোগে ব্যাংকগুলো ৩ বছর মেয়াদী বিজনেস প্ল্যান দেবে, যার ক্রমঅগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

 

অর্থসূচক/এএইচআর/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.