বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে নীতি সহায়তা দেওয়া হবে: গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, পুঁজিবাজারে বন্ড কেনাবেচা করার জন্য যে সেকেন্ডারি মার্কেট চালু হচ্ছে, সে মার্কেটের উন্নয়নে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, আমরা চাই, ভালো ভালো কোম্পানিগুলো বন্ড নিয়ে আসুক। তারা বন্ড ইস্যু করুক। সেকেন্ডারি মার্কেটটা প্রাণবন্ত করুক। সেকেন্ডারি মার্কেট প্রাণবন্ত করার জন্য এবং নতুন বন্ড আনার জন্য যে ধরনের নীতি সহায়তা করা দরকার বাংলাদেশ ব্যাংক সেটা সবসময় করবে।
বৃহষ্পতিবার (০৪ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। এসময় অর্থনীতির সমসাময়িক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদসহ ডেপুটি গভর্নরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বাংলাদেশ সিকিউরিটিস এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ভালো কাজ করছে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে যেসব নীতি সহায়তা দেয়া প্রয়োজন, সেটা আমরা দিয়ে যাবো। পুঁজিবাজারে ব্যাংকের এক্সপোজারের সংজ্ঞা নিয়ে গত ১০/১২ বছর ধরে যে সমস্যা চলছে সেটা এখন সমাধান হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের দুটো দিক আছে। একটা হলো ইক্যুইটি সাই্ট, আর একটা হলো ডেট সাইট। ইক্যুইটিসাইটকে আমরা পুঁজিবাজার বলি, এখানে আমরা সবাই কাজ করি। এটাই আমাদের বিনিয়োগের বড় জায়গা। কিন্তু যেটা হলো ডেট সাইট সেখানে বন্ড মার্কেটটা সেভাবে উন্নত হয়নি। আমি গভর্নর হওয়ার পরে বিএসইসি চেয়ারম্যান আমার সাথে দেখা করতে আসলে তাতে আমি বলেছি বন্ড মার্কেটটাকে কেন আপনারা শক্তিশালী করছেন না? আমি অর্থসচিব থাকার সময়েও তাকে এই প্রশ্ন করেছিলাম।
গত এক বছর ধরে তিনি এই বিষয়ে কাজ করছেন এবং আমার সাথে সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে বন্ড মার্কেট একবারেই অনুপস্থিত। কিন্তু এই বন্ড মার্কেটটা যদি কার্যকর হয়, বর্তমানে সরকারি বন্ডগুলো সেকেন্ডারি মার্কেটে নিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক একটা ফ্ল্যাটফর্ম তৈরি করে ফেলেছে। ইতোমধ্যে এর সব প্রত্রিয়া শেষ। খুব শিগগিরই এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে। তখন সরকারি বন্ডগুলো সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রি হবে। শেয়ারের যেহেতু সেকেন্ডারি মার্কেট নেই, এই বন্ডের সেকেন্ডারি মার্কেটটাকে প্রাণবন্ত করতে হবে। ভালো ভালো বন্ড নিয়ে আসতে হবে। বন্ডগুলো যদি সম্পদশালী হয় এবং গ্রহণযোগ্য হয় তাহলে মানষের বন্ডের প্রতি আস্থা তৈরি হবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে খেলাপি ঋণ বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ব্যাংকগুলো দীর্ঘমেয়াদে ঋণ বিতরণ করা। ব্যাংকগুলো মূলত স্বল্পমেয়াদে ঋণ বিতরণ করে। কিন্তু আমাদের দেশে বন্ড মার্কেট না থাকায় ব্যাংকগুলোকে বাধ্য হয়ে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ বিতরণ করতে হচ্ছে। ফলে শক্তিশালী বন্ড মার্কেট তৈরি হলে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের সমস্যা দূর হবে। বিনিয়োগকারীরা তাদেও প্রয়োজনীয় দীর্ঘমেয়াদী ঋণ বন্ড মার্কেট থেকে তুলবে। আর ব্যাংকগুলো তখন কেবল স্বল্পমেয়াদী ঋণ বিতরণ করতে পারবে। এটা যদি করতে পারে তাহলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমে আসবে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.