অর্থ আত্মসাৎ: এবি ব্যাংকের ১৭ কর্মকর্তাকে খুঁজে পায়নি পুলিশ

১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় অভিযুক্ত এবি ব্যাংকের ১৭ কর্মকর্তার কাউকেই খুঁজে পায়নি বলে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। তবে ওই ১৭ কর্মকর্তার বিদেশযাত্রা আটকাতে ইমিগ্রেশনে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

বুধবার (৩ আগস্ট) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজির আহমেদের পক্ষে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে জাল ওয়ার্ক অর্ডার ও অবৈধ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে এবি ব্যাংক থেকে ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২০২১ সালের ৮ জুন মামলা দায়ের করা হয়। এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের সত্বাধিকারী মো. এরশাদ আলীসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুদক এ মামলা করে। মামলার বাকি ১৬ আসামি ওই ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের সাবেক কর্মকর্তা।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওই ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন এরশাদ আলী। এই আসামি ব্যাংকের এই শাখা থেকে পদ্মা বহুমুখী সেতু কার্যালয়ের ঠিকাদার সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড ও চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের নাম করে ছয়টি ভুয়া ও জাল ওয়ার্ক অর্ডারের অনুকূলে ব্যাংক থেকে ১৬৬ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করা হয়। এই জাল ওয়ার্ক অর্ডারগুলো কোনও ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঋণ প্রদানের পক্ষে সুপারিশ করে ব্যাংকের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনে (সিআরএম বিভাগ) পাঠানো হয়। পরবর্তীকালে সিআরএম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ওই প্রস্তাব যাচাই-বাছাই ছাড়াই অবৈধ সুবিধা লাভের মাধ্যমে ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য ক্রেডিট কমিটি বরাবর পাঠায়। ক্রেডিট কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক পরস্পর যোগসাজশের মাধ্যমে কোনও রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাই ছাড়াই ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা জাল ওয়ার্ক অর্ডারের বিপরীতে ঋণের জন্য অনুমোদন প্রদান করেন।

এছাড়া এরশাদ করপোরেশন ওই শাখা থেকে ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে মোট ৭টি ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা গ্রহণ করেন। এই ঋণ প্রদান করা হয় ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়াই।

এই মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিমসহ দুই জন আবেদন জানান। পরে গত ১৪ জুন এবি ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের মামলায় দীর্ঘদিনেও আসামিদের গ্রেফতারে আদালতের আদেশ প্রতিপালন না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের আইজি ও ইমগ্রেশন বিভাগের অতিরিক্ত আইজিপিকে এ ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়। একইসঙ্গে এবি ব্যাংকের কর্মকর্তা আব্দুর রহিমসহ দুই আসামির জামিন আবেদনের শুনানি মুলতবি করেন আদালত।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.