ইউক্রেন সংকট সামাল দিতে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের অনেক দেশ যখন হিমসিম খাচ্ছে, ঠিক সেই সময়ে তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে নতুন সংঘাত আরও বড় বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে, এমন আশঙ্কা দানা বাঁধছে৷ এমন সংকটের স্ফুলিঙ্গ হতে পারে মার্কিন সংসদের নিম্ন কক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সম্ভাব্য তাইওয়ান সফর৷
আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এক চীন নীতি’ মেনে ওয়াশিংটন এতকাল তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব বজায় রেখে এসেছে৷ কিন্তু চীনের বেড়ে চলা আগ্রাসী মনোভাবের মুখে এবার বাইডেন প্রশাসন প্রকাশ্যে তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াতে এত বড় ঝুঁকি নেয় কিনা, আপাতত সে বিষয়ে জল্পনাকল্পনা চলছে৷
পেলোসি এরই মধ্যে তার এশিয়া সফরের শুরুতে সিঙ্গাপুরে এসে পৌঁছেছেন৷ মার্কিন সংসদ সদস্যদের এক প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি৷ এখনো পর্যন্ত পেলোসির সফর তালিকায় শুধু সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নাম রয়েছে৷ তার সম্ভাব্য তাইওয়ান সফর সম্পর্কে চরম হুমকি দিয়েছে বেইজিং৷ চীন তাইওয়ানের কাছে বিশাল সামরিক মহড়া শুরু করেছে৷ শনিবার চীনের মূল ভূখণ্ড ও তাইওয়ানের মাঝে শক্তি প্রদর্শন করেছে চীনা নৌ-বাহিনী৷ বিমান বাহিনীও রোববার তাইওয়ানের কাছে নজরদারি চালিয়েছে৷ আমেরিকাও গত সপ্তাহে দক্ষিণ চীন সাগরে ‘ইউএসএস রনান্ড রেগান’ নামের রণতরি পাঠিয়েছে৷ তবে ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপকে পূর্ব-পরিকল্পিত হিসেবে বর্ণনা করছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে তাইওয়ানের উপর চীনের সামরিক হামলার আশঙ্কা বাড়ছে৷ বিশেষ করে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার পর চীন এমন চরম পদক্ষেপ নিতে আরও ‘সাহস’ পেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন৷ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত সপ্তাহে পেলোসির সম্ভাব্য তাইওয়ান সফর সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সতর্ক করে দেওয়ার পর উত্তেজনা আরও বাড়ছে৷ টেলিফোনে শি বাইডেনকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’ না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন৷ মার্কিন প্রশাসন এই মুহূর্তে নতুন যুদ্ধের ঝুঁকি নিতে কতটা প্রস্তুত, সে বিষয়ে সংশয় দেখা যাচ্ছে৷ চীন তাইওয়ানের উপর সরাসরি হামলা চালালে ওয়াশিংটন সামরিক হস্তক্ষেপ করবে কিনা, সে বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনেরও কোনো স্পষ্ট অবস্থান নেই৷
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন পরিস্থিতি শান্ত করতে শুক্রবার বলেছিলেন, যে তাইওয়ানের প্রশ্নে চীনের সঙ্গে মতপার্থক্য সত্ত্বেও গত প্রায় চার দশক ধরে আমেরিকা নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা চালিয়ে এসেছে৷ ফলে তাইওয়ানের মানুষ উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে পেরছেন৷ তবে চীনের বর্তমান হুমকির সামনে ওয়াশিংটন মাথা নত করবে কিনা, তিনি সে বিষয়ে কিছু বলেননি৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, ডিপিএ, এএফপি
অর্থসূচক/এএইচআর
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.