শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে

ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পার্লামেন্ট সদস্যদের (এমপি) ভোটে রনিল বিক্রমাসিংহে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। এই সময় ২১৯ ভোটের মধ্যে ১৩৪ টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি।

বুধবার (২০ জুলাই) কলম্বো থেকে এক সংবাদ প্রতিনিধি মিনেলে ফার্ন্দানেজ জানান, এই মুহূর্তে পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শেষ হয়েছে।

এর আগে একাধিকবার দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও সামলাচ্ছিলেন তিনি। তবে রনিলকে নিয়ে দেশের জনগণের মধ্যে অসন্তোষ আছে। ফলে বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এরপরেও শ্রীলঙ্কার অচলাবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।

গত প্রায় ছয়মাস ধরে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। দেশের সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে গেছেন দেশের জনগণ। তারই জেরে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন পদত্যাগী প্রেসিডেন্ট গুতাবায়া রাজাপাকসে। পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন গুতাবায়ার ভাই তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ্রা রাজপাকসে। প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ দখল করে নিয়েছিল জনসাধারণ। তারপরেই নতুন নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়। বুধবারই পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হয়।

নির্বাচনের আগে টুইট করে বিরোধী দলনেতা ভারতের কাছে বিশেষ সাহায্য চেয়েছেন। টুইটে তিনি লিখেছেন, শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট যে-ই হোক না কেন, ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক দল যেন তাকে সমর্থন করে এবং শ্রীলঙ্কার পাশে দাঁড়ায়।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূলত তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, জনগণের একটি বড় অংশ মনে করে, সাবেক সরকারের ঘনিষ্ঠ বিক্রমাসিংহে।

বিক্রমাসিংহের সঙ্গে টক্কর দিয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী আলাহাপ্পেরুমা। জনগণ এবং বিরোধীদের একটি বড় অংশ তার সঙ্গে আছে। গত সপ্তাহে তিনি সকলকে নিয়ে সরকার তৈরির আবেদন জানিয়েছিলেন।

প্রেমাদাসা দৌড়ে তৃতীয় ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু বুধবার তিনি আলাহাপ্পেরুমার প্রতি তার সমর্থন জানান। এনিয়ে টুইটও করেন তিনি। বলেন, সাবেক শিক্ষা এবং গণমাধ্যমের মন্ত্রীকে তিনি সমর্থন করছেন।

এ ছাড়া দেশটির প্রধান প্রতিপক্ষ ক্ষমতাসীন দলের আইনপ্রণেতা দুলাস আলাহাপেরুমা ৮২টি ভোট পেলেও তৃতীয় প্রার্থী বামপন্থির নেতা অনুরা কুমারা দিসানায়াকা পেয়েছেন মাত্র তিন ভোট। তাও নিজের দল থেকে।

ভারতের দক্ষিণের এই দ্বীপরাষ্ট্রে প্রায় দুই কোটি ২০ লাখ মানুষ বসবাস করেন। গত কয়েকমাস ধরে সেখানে তেল নেই, তীব্র খাদ্য সংকট। ব্যাংক ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। সূত্র: ডিডাব্লিউ, আল-জাজিরা, রয়টার্স, পিটিআই

অর্থসূচক/এইচডি/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.