সেই নবজাতক জন্ডিসে আক্রান্ত, মমেক হাসপাতালে স্থানান্তর

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় নিহত মায়ের পেট ফেটে অলৌকিকভাবে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতক ভালো নেই। শিশুটি জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছে। এজন্য তাকে লাবীব হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

সেখানে নবজাতক নিবিড় পরিচর্চা কেন্দ্রে (এনআইসিইউ) চিকিৎসা শুরু হয়েছে শিশুটির। একইসঙ্গে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সকালে তার চিকিৎসায় পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে।

লাবীব হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, শিশুটি কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (সিবিএমসি) শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে ছিল। কিন্তু জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দেওয়ায় চিকিৎসক ফটোথেরাপি দেওয়ার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে সোমবার রাতে শিশুটিকে সেখানে ভর্তি করা হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজী জানান, শিশুটির চিকিৎসায় নিউনেটাল বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের মতামত অনুযায়ী শিশুটি এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। শিশুটি জন্ডিসে আক্রান্ত, হাড় ভাঙা ও রক্তস্বল্পতা রয়েছে। মেডিকেল বোর্ডের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসা চলছে।

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, জন্ডিসের জন্য শিশুটিকে ফটোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে। তার সার্বক্ষণিক খোঁজখবর আমরা রাখছি।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৬ জুলাই) বেলা পৌনে ৩টার দিকে ত্রিশালের কোর্টভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না আক্তার রহিমা (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। প্রসবের নির্ধারিত সময় অতিক্রম হওয়ায় আলট্রাসনোগ্রাম করানোর জন্য স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েছিলেন তারা। সেখান থেকে ফেরার পথে ট্রাকচাপায় ঘটনাস্থলেই ওই তিনজন নিহত হন। তবে ওই সময় অলৌকিকভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হয় ফুটফুটে এক নবজাতক। নবজাতকটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যায় পুলিশ ও আশপাশের লোকজন। তারা শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। সেখানে নেওয়ার পর জানা যায় জীবিত আছে নবজাতক কন্যাটি।

সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উন্নত চিকিৎসার জন্য নবজাতকটিকে ময়মনসিংহ সদরের সিবিএমসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে শিশুটি নগরীর লাবীব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সেখান থেকে সোমবার রাতে শিশুটিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.