এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু কাল, পেট্রোল পাম্প বন্ধ সপ্তাহে একদিন

এলাকাভিত্তিক দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) থেকে বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে এ লোডশেডিং অব্যাহত থাকবে।

সোমবার (১৮ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা জানান। এই সময় তিনি বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে সাময়িক সময়ের জন্য এই লোডশেডিং হবে। আগেই সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, পৃথিবীতে আপনারা জানেন একটা যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। … ইউক্রেনের যুদ্ধের যে প্রভাব পড়ছে সেটা যুদ্ধের চেয়ে কম না। পৃথিবীর উন্নত দেশে লোডশেডিং হচ্ছে, বৃটেনে হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ায় হচ্ছে, জাপানে হচ্ছে, দেশে অর্থ থাকার পরেও তারা নিজেদের ব্যয়কে সংকোচন করছে। আমরা আজকে যা আলোচনা করেছি, তার উল্লেখযোগ্য দিক হলো, আমরা আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে আনবো, যাতে আমাদের খরচ কম হয়, সেই পর্যায়ে, যেটা সহনশীল হয়, সেই পর্যায়ে নিয়ে আসা।

ডিজেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ডিজেলে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন আপাতত স্থগিত করলাম। তাতে অনেক টাকা সশ্রয় হবে।

এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং চালুর বিষয়ে তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, বিদ্যুতের যে ঘাটতি আমরা সবাই সেটা ভাগ করে নেব। তাতে দিনে এক থেকে দেড় ঘণ্টা, কোথাও দুই ঘণ্টাও লোডশেডিং হতে পারে। কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এবং পৃথিবীর এই দুযোর্গপূর্ণ সময়ে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। কীভাবে বিদ্যুতের ব্যবহার কমানো যায় এ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। আপনারা আগেও শুনেছেন দোকানপাট বন্ধ থাকবে আটটার পরে। যেখানে এসি ব্যবহার করা হয়। সেখানে ২৪ ডিগ্রির ওপরে রাখতে হবে। মসজিদে মুসল্লি যারা আপাতত তারা এসি ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন। আমাদের শপিংমল দোকানপাট সব বন্ধ থাকবে। এখানে যারা নির্দেশনা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।

অফিস সময় কমানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, আমাদের অফিসে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হচ্ছি। আমাদের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। সরকারি অফিসের সময় কিছু কমিয়ে সেখানে আমরা কিছু বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি সাশ্রয় করতে পারি। যেসব সভায় হয়, এই সভাগুলো আমরা যদি অনলাইনে করি তাহলে আমাদের সবার সময়ও বাঁচবে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিও সাশ্রয় হবে।

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, বিষয়টা হলো আমাদের কিছুটা সাশ্রয়ী হতে হবে। সাশ্রয় করার জন্য আমরা ঠিক করেছি এলাকাভিত্তিক- আগে থেকে গ্রাহকদের জানিয়ে দেব সে অনুপাতে আমরা লোডশেডিংয়ে যাচ্ছি। এটা আমাদের বিদ্যুৎ সাশ্রয় করার জন্য।

কবে থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু হবে এমন প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, আমরা আশা করছি কালকে থেকে আমরা শুরু করবো। আমরা ধীরে ধীরে এটাকে বৃদ্ধি করার চেষ্টা করবো। আমরা দেখবো প্রথম সপ্তাহে কী রকমভাবে প্রভাব ফেলছে কোন এলাকাতে।

অনলাইন অফিস করার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের অফিসগুলো ভার্চু্যয়ালি করলে সব থেকে বেশি আমাদের সাশ্রয় হবে। আশা করছি সবগুলো আমরা ভার্চু্যয়ালি করবো।

গাড়িতে জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমাতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে নসরুল হামিদ বলেন, গাড়িতে যাতে তেল কম ব্যবহার করা হয়, সেটার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি আমাদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির যেসব গ্রাহক আছে আমাদের সহযোগিতা করবেন। আগামীকাল থেকে সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

অর্থসূচক/এইচডি/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.