নাভানা ফার্মার শেয়ারের কাট-অফ প্রাইস নির্ধারণ

বুক বিল্ডিং পদ্ধতির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) পুঁজিবাজারে আসার প্রক্রিয়ায় থাকা নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ারের কাট-অফ প্রাইস (Cut-off price) নির্ধারণ হয়েছে ৩৪ টাকা। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নিলামে এই মূল্য নির্ধারণ হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আইপিওর নিয়ম অনুসারে গত ৪ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত ওই নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলামে ২৮১টি দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। এতে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম উঠে ৫০ টাকা। আর সর্বনিম্ন দাম প্রস্তাব করা হয় ২০ টাকা। সব প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে শেয়ারের ভারিত গড় মূল্য দাঁড়ায় ৩৪ টাকা (৩৩ টাকা ৯৭) পয়সা। এটিই শেয়ারের কাট-অফ প্রাইস।

জানা গেছে,  মাত্র ২ সেকেন্ডে শেষ হয়ে গেছে নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার বিক্রির নিলাম। বর্তমান বিধি অনুসারে, কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্যের (এনএভিপিএস) ১ দশমিক ২ গুণের বেশি দর প্রস্তাব করা যায় না বলে নিলামে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও হয়তো বেশি দর প্রস্তাব করতে পারেনি। তাই শেয়ার প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে আইনী সীমার মধ্যে যতটুকু সর্বোচ্চ দর প্রস্তাব করা যায়, ততটুু দর প্রস্তাব করে সবার আগে ওই প্রস্তাব জমা দেওয়ার চেষ্টা করেছে সবাই। এ কারণে এত অল্প সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রির নিলাম শেষ হয়ে গেছে।

নিলামে ৩৪ দরে নাভানা ফার্মার শেয়ার কেনার জন্য ২৬৪টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব জমা দেয়। প্রতিষ্ঠানগুলো মোট ২ কোটি ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ শেয়ারের জন্য প্রস্তাব করে। এই শেয়ারের মোট মূল্য ৮৩ কোটি ৪৫ লাখ ৮৫ হাজার ৬০০ টাকা, যা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত কোটার ৪২৫ দশমিক ৪৬৫ শতাংশ।

নিলামে ৩৩ টাকা দরে শেয়ার কেনার জন্য প্রস্তাব করে ১০ টি প্রতিষ্ঠান। তারা মোট ৯ লাখ ৬৫ হাজার শেয়ার কেনার জন্য প্রস্তাব করে। এছাড়া ৩২ টাকা দর প্রস্তাব করে ৪ প্রতিষ্ঠান, ২৭ টাকা ২ প্রতিষ্ঠান এবং ২৫ টাকা প্রস্তাব করে একটি প্রতিষ্ঠান।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুসারে, কাট-অফ প্রাইসের চেয়ে ৩০ শতাংশ কম দামে আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করা হবে।

নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৭৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। এই টাকা কোম্পানির নতুন উৎপাদন ভবন নির্মাণ, নতুন ইউটিলিটি ও ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন নির্মাণ, সেফালোস্ফোরিন ইউনিটের সংস্কার, আংশিক ঋণ পরিশোধ ও আইপিওর জন্য ব্যয় করবে।

আইন অনুসারে, বুক বিল্ডিং পদ্ধতির আইপিওতে মোট ইস্যুতব্য শেয়ারের নির্ধারিত অংশ প্রথমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে বিডিংয়ের মাধ্যমে বিক্রি করতে হয়। এতে যে দামে শেয়ার বিক্রি শেষ হয়, ওই দামের (কাট-অফ প্রাইস) উপর ৩০ শতাংশ ছাড় দিয়ে তা আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির প্রস্তাব করতে হবে।

গত ১ জুলাই, ২০২১ থেকে ৩১ মার্চ, ২০২২ তারিখ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ২ টাকা ৩৯ পয়সা। গত ৫ বছরে কর পরবর্তী মুনাফার ভারিত গড় হারে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৫১ টাকা।

গত ৩১ মার্চ, ২০২২ তারিখে পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৯ টাকা ০২ পয়সা। আর পুনর্মূল্যায়ন পরবর্তী মূল্য ছিল ৪৩ টাকা ৫৩ পয়সা।

আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে বিএসইসির দেওয়া শর্ত, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির আগে কোম্পানিটি কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে না।

কোম্পানিটির ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনার্স ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও ইবিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.