এলোমেলো ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের হার

জিততে হলে শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৪৪ রান। কার্যত হার অনেক আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে। হতাশা বাড়িয়েছে সাকিব আল হাসানের হাফ সেঞ্চুরি। এই টাইগার ব্যাটার দারুণ খেললেও তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই। উল্টো নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ম্যাচ বের হয়ে গেছে বাংলাদেশের হাত থেকে।

আফিফ হোসেনকে নিয়ে সাকিব যা একটু আশা দেখিয়েছিলেন তাও নিভে গেছে এই জুটি ভাঙার পর। দিশাহারা বোলিংয়ের পর বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি ওপেনাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই লিটন দাসের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এই ওপেনার ওবেড ম্যাকয়ের বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে শামার ব্রুক্সের হাতে ক্যাচ দেন। পরের বলেই এনামুল হক বিজয় বোল্ড হয়ে ফেরেন।

এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনি ৭ বলে ১১ রান করে ওদেন স্মিথের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে মিড অফে ম্যাকয়ের হাতে ক্যাচ দেন। বেশ কিছুদিন ধরেই এই ফরম্যাটে রান খরায় ভুগছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সর্বশেষ ৯ ইনিংসে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১০০ রান। এর মধ্যে তার সর্বোচ্চ ইনিংসটি ২১ রানের।

দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের হাল ধরেন সাকিব ও আফিফ। পঞ্চাশ পেরুনো এই জুটি থামান রোমারিও শেফার্ড। এই ক্যারিবীয় পেসারের বলে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে আউট হন আফিফ। সাকিব একপ্রান্ত আগলে রাখলেও তাকে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন নুরুল হাসান সোহান। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার আকিল হোসেইনের বলে পুল করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন। এরপর মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে ৪৫ বলে হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছান সাকিব।

শেষ ওভারে মোসাদ্দেক অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে শেফার্ডের বলে উইকেটরক্ষক নিকোলাস পুরানকে ক্যাচ দেন। ফলে তার ইনিংস শেষ হয় ১৫ রানে। সাকিব শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৫২ বলে ৬৮ রান করে। এই ইনিংসের মধ্য দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে ২ হাজার রানের মেইল ফলক ছুঁয়েছেন এই টাইগার ব্যাটার। ৩৫ রানের হারে সাকিবের মাইলফলটা স্মরণীয় করতে পারেনি বাংলাদেশ।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই মারমুখি ছিলেন ক্যারিবীয় ওপেনার কাইল মেয়ার্স। তিনি চড়াও হয়েছিলেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদের ওপর। এই পেসারের ওয়াইডিশ বলে কাভারের ওপর দিয়ে চার মেরে রানের খাতা খোলেন মেয়ার্স। ওভারের পঞ্চম বলে লং অফের ওপর দিয়ে একটি ছক্কাও মেরেছিলেন তিনি। দারুণ শুরু পেলেও মেয়ার্সকে থিতু হতে দেননি শেখ মেহেদী। নিজের পঞ্চম বলে তিনি বোল্ড করেন ১৭ রান করা মেয়ার্সকে। নিজের প্রথম ওভারে উইকেট পেয়েছেন সাকিবও।

এই টাইগার অলরাউন্ডারকে স্লগ গিয়ে টপ এজ হয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ক্যাচ দিয়েছেন শামার ব্রুক্স। এরপর নিকোলাস পুরানকে নিয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে ক্যারিবীয়দের বিপর্যয় সামাল দেন ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং। এই দুজনের ৭৪ রানের জুটি ভেঙেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। মোসাদ্দেকের লেন্থ বলে স্লগ সুপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়েছেন পুরান। সঙ্গী ফিরে গেলেও রভম্যান পাওয়েলকে নিয়ে ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কিং।

সাকিব নিজের চতুর্থ ওভার করতে এসে পাওয়েলের তোপের মুখে পড়েছিলেন। তিন ছক্কা আর এক চারে সেই ওভার থেকেই ক্যারিবীয়রা তোলে ২৩ রান। এরপর বোলিংয়ে এসে কিংকে ব্যক্তিগত ৫৭ রানে সাকিবের ক্যাচ বানান শরিফুল ইসলাম। শেষদিকে রোমারিও শেফার্ডকে নিয়ে ২০ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন পাওয়েল। ইনিংসের শেষ ওভারে বল করতে এসে শেফার্ডকে ব্যক্তিগত ৩ রানে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে মেহেদীর ক্যাচ বানান শরিফুল। অবশ্য ২৮ বলে ৬১ রান করে পাওয়েল অপরাজিত থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বড় সংগ্রহ নিশ্চিত করেছেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.