‘মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ডলার রেট ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ’

মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ডলারের মান ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ রেখে যাচ্ছি পরবর্তী গভর্নরের কাছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা এটা ঠিক রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

গভর্নর ফজলে কবিরের শেষ কর্মদিবসে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারির পক্ষ থেকে আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ফজলে কবির তৃতীয় গভর্নর যাকে এভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিদায় জানানো হলো। ১১তম গর্ভনর হিসেবে ৬ বছর ৩ মাস দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ করা হলে সবাই সমালোচনা করে বলেছিল, এটা সম্ভব না।

এরপর মুদ্রানীতিতে এখন নীতি সুদহার বাড়ানো হলেও অনেকে একই কথা বলছেন। তারা বলছেন, ঋণের একক সুদহার তুলে না নিলে নীতি সুদ বাড়িয়েও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।

কিন্তু আমি মনে করি এটা কার্যকর সিদ্ধান্ত। যা প্রধান অর্থনীতিবিদ, ডেপুটি গভর্নররা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করবেন বলে আশা করছি।

বিদায় অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি ছিলেন গভর্নরের সহধর্মিনী সাবেক সচিব মাহমুদা শারমীন বেনু।

বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ ও ডেপুটি গভর্নররা। এসময় নির্বাহী পরিচালক ও ব্যাংকের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ফজলে কবিবের কর্ম জীবনের উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

গভর্নরকে নিয়ে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পর খুব ক্রান্তিলগ্নে তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। রিজার্ভ চুরির ঘটনা ফজলে কবির আগে খতিয়ে দেখেছেন। মূল ঘটনা সবার সামনে এনেছেন।’

তারা আরও বলেন, ‘ ফজলে কবির তার সময়ে অনেক নীতিমালা জারি করেছেন। এ কারণে অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে। ‘

‘করোনার সময়ে তিনি দক্ষতার সাথে বিভিন্ন প্রনোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করেছেন। করোনায় ব্যাংকাররা মারা গেলে ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। পরিবারকে টাকা দেয়ার জন্য বারবার তাগাদা করেছেন। ফলে ১৮৯ জন ব্যাংকার করোনায় মারা গেছেন, তাদের প্রত্যেক পরিবার ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছে। ‘

‘তিনি মানবিক মানুষ। সমস্যা সমাধানে সবসময়ই সোচ্চার ছিলেন। ব্যাংকারদের ন্যূনতম বেতন কাঠামো করেছেন। ‘

গভর্নরের সহধর্মিনী মাহমুদা শারমীন বেনু বলেন, ‘ আমার পেশাগত জীবনে কারও বিদায়ে এমন অনেকবার বক্তব্য রেখেছি। কিন্তু আজ সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখা ব্যতিক্রম। যে কোনো বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য আবেগময়।’

ব্যক্তিজীবনে ফজলে কবির কেমন? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তিনি বাইরেও যেমন, ভেতরেও তেমন। এক ও অভিন্ন। তিনি ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে একজন মানবিক মানুষ। তার অফিসকে কখনো পরিবারের মধ্যে নিয়ে আসেননি।পরিবারে তিনি আমাদের কর্তা। বাসার সবার বিষয়ে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।’

সবশেষে গভর্নর বলেন, দেখতে দেখতে ৬ বছর ৩ মাস পার হয়ে গেলো। আমার মনে হয় এই সেদিন মধ্যরাতে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ফোনে বললেন “সো ইউ আর দি গভর্নর”।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.