শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা: ২ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

সাভারের আশুলিয়া হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের-শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে প্রকাশ্যে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি আশরাফুল ইসলাম জিতুকে স্থায়ী ও কলেজ শাখার এক ছাত্রীকে অস্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গত ৩০ জুন কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসানের স্বাক্ষরিত আলাদা ২টি নোটিশে এই ২ জনকে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়। জিতুর বহিষ্কার আদেশে লেখা হয়েছে, ‘গত ২৫ জুন প্রতিষ্ঠানের পৌরনীতি ও সুশাসন বিভাগের প্রভাষক উৎপল কুমার সরকারকে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে হত্যা ও অবমাননা করার দায়ে দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র জিতুকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, ‘ঘটনার পরপরই গত ২৭ জুন স্কুলের শিক্ষক পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জিতুকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে ৩০ জুন তা নোটিশ আকারে প্রকাশ করা হয়। একই দিনে জিতুর সঙ্গে একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীর সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়। এ কারণে তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুন আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ওই শিক্ষকের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে ক্রিকেটের স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির ছাত্র জিতু। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার মারা যান। ওই দিনই উৎপলের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার আশুলিয়া থানায় জিতু ও অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২৯ তারিখ পুলিশ জিতু ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করে।

শিক্ষার্থীরা বলছে- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রকাশ্যে শিক্ষককে হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। সেখানে সিসি ক্যামেরা সচল থাকলেও পরিকল্পনা অনুসারে আগেই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয় ওই শিক্ষার্থী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাবা উজ্জ্বল হোসেনের ব্যবসায়িক অংশীদার হোটেল ব্যবসায়ী মাজেদ। ওই কলেজের প্রথম বর্ষে পড়ুয়া মাজেদের ছোট বোনের সঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে কিছুদিন আগে ক্লাসরুমে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলেন শিক্ষক উৎপল। বিষয়টি ওই ছাত্রীর পরিবারকে জানানোর পর থেকেই উৎপলের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ওই শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষক উৎপলকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.