‘যুবশক্তির কর্মসংস্থান না করলে জনমিতিক লভ্যাংশের সুফল পাওয়া যাবে না’

মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ কর্মক্ষম মানুষ নিয়ে জনমিতিক লভ্যাংশের এক সোনালী সময় অতিক্রম করছে বাংলাদেশ। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই কর্মক্ষম যুবশক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ না করা গেলে জনমিতিক লভ্যাংশের সুফল ভোগ করা যাবে না।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বারস ক্লাবের এলডি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তরুণরা বাজেট নিয়ে তাদের এমন মতামত ব্যক্ত করেন।

গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন, দি আর্থ সোসাইটি, ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ, তারুণ্যের বাজেট আন্দোলন, সেইফটি এন্ড রাইটস সোসাইটি, দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এর আগে, বৃহষ্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, যা দেশের এ যাবৎকালের সর্ববৃহৎ বাজেট। করোনা মহামারি কাটিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন-অগ্রগতিতে এ বাজেটের গুরুত্ব অপরিসীম।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দি আর্থ সোসাইটির মোসলেহ উদ্দিন।

গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফা বলেন, ডিবিএম প্রায় বারো বছর ধরে জাতীয় বাজেটে সাধারণের তথা করদাতাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ ও বাজেট বিকেন্দ্রীকরণের কথা বলে আসছেন; গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করতে হলে শুধু নির্বাচনই যথেষ্ট নয়, রাস্ট্র প্রক্রিয়ার নানান দিক পদ্ধতি প্রক্রিয়া এগুলোরও গনতন্ত্রায়ন দরকার।

দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. জাকারিয়া বলেন, তরুণদের সাথে জনপ্রতিনিধিদের এই মতবিনিময়ের আয়োজনটি জুন মাস নয় আরো আগে করতে পারলে এর ফলটি আরো ভাল পাওয়া যেত। তরুণদের তিনি মাদক থেকে দুরে এবং তথ্য প্রযুক্তির কুফল নয় সুফলটাকে বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ব্যবহার করার আহ্বান জানান।

এসময় সংসদ সদস্য আশেক উল্ল্যাহ রফিক বলেন, গবেষনা এবং দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাজ চলছে। স্থানীয় পর্যায়ে বাজেট এবং জনপ্রতিনিধিত্বমূলক বাজেট তৈরিতে তরুণরা যখন জাগ্রত হবে তখন আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ধারাবাহিকভাবে এই বিষয়গুলোতে সচেতন হবে।

আরেক সংসদ সদস্য আহসান আদেলুর রহমান বলেন, নতুন করে যাতে ধূমপায়ী তৈরী না হয় সেজন্য তিনি বাজেটে তামাকের উপর ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ কর আরোপ করা এবং পরিবেশ রক্ষায় সিঙ্গেল ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন।

তিনি আরো বলেন, কূষি খাতের উপর গুরুত্ব দিয়ে আমাদের দেশে যে ১০ লাখ এসএসসি পাস তরুণ রয়েছে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। তিনি কারিগরি ক্ষেত্রে সক্ষমতা এবং মানউন্নয়নের কথা বলেন।

এমপি শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, এখন পর্যন্ত তরুণদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কোন মেগা প্রজেক্ট হয়নি। যেহেতু তরুণ, মন্ত্রী নাই, সচিব নাই তাই তরুণ দের স্বার্থ বাজেট সংসদে কখনই পাস হবে না।

এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ বলেন, তরুণরা ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রতিনিধি, তারা বাজেটের মত বিষয় নিয়ে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করছেন। এতে তাদেরকে সাধুবাদ জানাই, ফোরাম থেকে অনেকেই বলেছেন বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনিয়মের কথা, এ কথা আমরা স্বীকার করছি তবে এ বিষয়ে আমরা কাজ করছি, এক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।

এমপি মীর মুস্তাক আহমেদ রবি বলেন, তরুণরাই পারবে যে সকল জায়গায় ঘাটতি আছে তা পুরণ করে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে। তামাকের বিষয়ে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে কর আরো বাড়িয়ে দেওয়া উচিত, কারন এটাকে আমরা নিরুৎসাহিত করছি।

ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ’র চেয়ারপার্সন তানভির শাকিল জয় বলেন, কোভিড কালীন সময়েও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নেগেটিভ হয়নি। এই প্রতিকুল পরিস্থিতির মধ্যে এইবার বাজেট তৈরি হয়েছে যা কিনা আমাদেরও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।

গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক এবং সেইফটি এন্ড রাইটস সোসাইটির নির্বাহী পরিচলিক সেকেন্দর আলী মিনা বলেন, তরণদের সংস্কৃতির বিকাশ না হলে তারা অনেক কিছুতে আসক্ত হতে পারে। খেলাধুলা, সাংস্কুতিক কর্মকান্ডে তরূণদের অংশগ্রহণ না থাকলে তারা ভিন্ন পথে যাবে । তরুণদের কর্মসংস্থানকে গুরুত্ব দিয়ে তিনি দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির কথা বলেন। তিনি বলেন,গ্লোবালি তরুণরা মিনিংফুল এডুকেশন চাই। সেই মিনিংফূল এডুকেশন কি হবে তা তরুণদের বের করতে হবে এবং এই দাবীগুলো তরুণদের তুলে ধরতে হবে।

অর্থসূচক/এমএস/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.