পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু

বহু প্রতিক্ষিত পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। ছয়টি টোল ঘরের একটিতে টাকা পরিশোধ করেই যানবাহন উঠে যাচ্ছে সেতুতে। নির্দিষ্ট পরিমাণ টোল দিয়ে যানবাহনগুলো সুশৃঙ্খলভাবে সেতুর ওপর দিয়ে পদ্মা পার হচ্ছে।

রোববার (২৭ জুন) ভোর থেকেই ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রসওয়েতে ভিড় জমাতে থাকে যানবাহন। সবাই নিজের স্মৃতি ধরে রাখতে মোবাইল ফোনে ভিডিও বা ছবি তুলছেন। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাদের যথাযথ প্রস্তুতি রয়েছে।

টোল ম্যানেজার কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা সকাল ৬টা থেকে টোল আদায়ের মাধ্যমে সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। ছয়টি টোল ঘর থেকে টোল নেওয়ার কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা চাচ্ছি-নিরবচ্ছিন্নভাবে টোল কার্যক্রম পরিচালনা করে যেতে।’

এদিকে গত ২৩ জুন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের জারি করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতুর ওপর অনুমোদিত গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার, পদ্মা সেতুর ওপর যেকোনও ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে ছবি তোলা/হাঁটা সম্পূর্ণ নিষেধ। তিন চাকাবিশিষ্ট যানবাহন (রিকশা, ভ্যান, সিএনজি অটোরিকশা ইত্যাদি), হেঁটে, সাইকেল বা নন-মটোরাইজড গাড়ি যোগে সেতু পারাপার হওয়া যাবে না। গাড়ির বডির চেয়ে বেশি চওড়া এবং ৫.৭ মিটার উচ্চতার চেয়ে বেশি উচ্চতার মালামালসহ যানবাহন সেতুর ওপর দিয়ে পারাপার করা যাবে না। সেতুর ওপরে কোনও ধরনের ময়লা ফেলা যাবে না বলেও জানানো হয়।

পদ্মা সেতু পারাপারে সরকার নির্ধারিত টোল হার অনুযায়ী- পদ্মা সেতু পারাপারে মোটরসাইকেলে ১০০ টাকা, গাড়ি ও জিপে ৭৫০ টাকা, পিকআপে এক হাজার ২০০ টাকা এবং মাইক্রোবাসে এক হাজার ৩০০ টাকা টোল পরিশোধ করতে হবে। বাসের ক্ষেত্রে ছোট বাস (৩১ আসন) এক হাজার ৪০০ টাকা, মাঝারি বাস (৩২ আসন বা এর বেশি) দুই হাজার টাকা, বড় বাস (থ্রি-এক্সেল) দুই হাজার ৪০০ টাকা, ট্রাককে (পাঁচ টন পর্যন্ত) এক হাজার ৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে (পাঁচ টনের বেশি ও সর্বাধিক আট টন পর্যন্ত) দুই হাজার ১০০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (আট টনের বেশি এবং সর্বাধিক ১১ টন) দুই হাজার ৮০০ টাকা, ট্রাকে (থ্রি-এক্সেল পর্যন্ত) পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা এবং ট্রেইলারকে (ফোর-এক্সেল পর্যন্ত) ছয় হাজার টাকা টোল দিতে হবে।

এর আগে পদ্মা সেতুর দুয়ার খুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (২৫ জুন) সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

প্রসঙ্গত, সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থাপনা পদ্মা সেতু। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার। দ্বিতল এই সেতুর এক অংশ পদ্মা নদীর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত এবং অপর অংশ নদীর শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যুক্ত। একইসঙ্গে ট্রেন ও গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে এ সেতুতে। চার লেনবিশিষ্ট ৭২ ফুট প্রস্থের এ সেতুর নিচতলায় রয়েছে রেল লাইন। এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.