ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী প্রথম আদিবাসী নারী

দ্রৌপদী মুর্মু বনাম যশবন্ত সিনহা। ভারতে আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লড়বেন এই দুজনই। আর এই প্রথম এক আদিবাসী নারী ক্ষমতাসীন জোট নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ-র প্রার্থী হচ্ছেন এবং যেহেতু সংখ্যার হিসাবে এনডিএ বিরোধীদের থেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে আছে, তাই এই প্রথম ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে বসতে পারেন এক আদিবাসী নারী।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই রাজনৈতিক চমক দিতে ভালোবাসেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গতবার দলিত নেতা রামনাথ কোবিন্দকে বেছে নিয়ে তিনি চমকে দিয়েছিলেন। এবার দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করে আবার চমক দিয়েছেন মোদী। দ্রৌপদী আদিবাসী নারী, খুবই গরিব পরিবার থেকে উঠে এসেছেন, এ সবই ঠিক, সেই সঙ্গে এটাও ঠিক তাকে প্রার্থী করে বিজেডি নেতা নবীন পট্টনায়েকের সমর্থন জোগাড় করে নিয়েছেন মোদী। দ্রৌপদী ওড়িশার মেয়ে। তাই নবীন তাকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে বিজেপি সূত্র জানাচ্ছে। সেই সঙ্গে তিনি ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল ছিলেন। ফলে আরেক আদিবাসী নেতা এবং ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে বিজেপি নেতারা নিশ্চিত বলেই সূত্র জানাচ্ছে।

মঙ্গলবার রাতে বিজেপি-র পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠকের পর এই ঘোষণা হয়। এর আগে অমিত শাহ, জে পি নাড্ডারা উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তখন গুজব রটতে থাকে বেঙ্কাইয়াকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। কিন্তু রাতে দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রার্থী করে মোদী আবার প্রমাণ করে দেন, তিনি কাকে প্রার্থী করবেন তার আঁচ কেউ আগে থেকে পান না।

এদিন দুপুরেই সাবেক পররাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রী এবং আমলা যশবন্ত সিনহাকে প্রার্থী করে বিরোধীরা। শরদ পাওয়ারের বাড়িতে কংগ্রেস সহ ১৮টি বিরোধী দলের নেতাদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে যশবন্ত তৃণমূল থেকে ইস্তফাও দেন। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ জানান, যশবন্তের বিপুল অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই মুহূর্তে তিনিই সেরা প্রার্থী বলে বিরোধী দলের নেতারা মনে করছেন।

দ্রৌপদী মুর্মুর জন্ম ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার একটি গ্রামে। খুবই গরিব পরিবার থেকে তিনি লড়াই করে উঠে এসেছেন। তিনি বিজেপি নেত্রী ছিলেন। পরে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল হন। ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যপাল পদে ছিলেন। তিনিই ঝাড়খণ্ডের প্রথম নারী রাজ্যপাল ছিলেন। তিনিই ওড়িশার প্রথম আদিবাসী নারী যিনি রাজ্যপাল হয়েছেন। তিনিই প্রথম আদিবাসী নারী যিনি রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হলেন। আর জিততে পারলে তিনিই ভারতের প্রথম আদিবাসী নারী রাষ্ট্রপতি হবেন।

এনডিএ-র কাছে প্রায় ৪৯ শতাংশ ভোট আছে। নবীন পট্টনায়েকের বিজেডির সমর্থন পেলেই তাদের সঙ্গে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট থাকবে। এছাড়াও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সমর্থন তিনি পেতে পারেন। ওয়াইএসআর কংগ্রেস-সহ আরো কিছু দলের সমর্থন দ্রৌপদীর কাছে যেতে পারে। ফলে কোনো অঘটন না হলে দ্রৌপদী মুর্মুর জেতার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। সূত্র: ডিডাব্লিউ, পিটিআই, এএনআই

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.