আরএসআরএমের এমডি আটক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (আরএসআরএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাকসুদুর রহমানকে আটক করেছে র‍্যাব। ঋণ খেলাপি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রেক্ষিতে তাকে আটক করা হয়েছে।

বুধবার (৮ জুন) দিবাগত রাত ১২টার পর গুলশানের ১২০ নাম্বার সড়কের  একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে আটক করা হয়।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আরএসআরএমের এমডি মাকসুদুর রহমান দেশের অন্যতম শীর্ষ ঋণখেলাপি। অর্থ আত্মসাতের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতের দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। এর মধ্যে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় তাঁকে আটক করা হয়।

মাকসুদুর রহমান ও তার আরএসআরএম গ্রুপের পরিচালকদের  বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে। জনতা ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকসহ এক ডজন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তাদের কাছে বিপুল টাকা পায়।

এর মধ্যে জনতা ব্যাংকের ৩১৩ কোটি টাকা ঋণখেলাপের অভিযোগে গত ২৭ জানুয়ারি মাকসুদুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

২০১৮ সালের ২৯ মার্চ ৩১২ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৭ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে আদালতে মামলা করে (মামলা নং ৫৩/১৮) জনতা ব্যাংকের লালদীঘি করপোরেট শাখা। এতে আসামি করা হয় মাকসুদুর রহমানকে। আরএসআরএমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রতনপুর শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের নামে ওই ঋণ নেওয়া হয়েছিল। মামলা দায়ের করার সাড়ে তিন বছর পর ঘটনাটি আদালতের নজরে এলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচারের মাধ্যমে সমন জারি নিশ্চিত করা হয়।

অন্যদিকে আরএসআরএমের কাছ থেকে খেলাপি ঋণের ২০১ কোটি টাকা আদায়ে প্রতিষ্ঠানটির স্থাবর সম্পত্তি নিলামে তুলতে গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয় সোনালী ব্যাংক।

গত ৫ জানুয়ারি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ করা নিলাম বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মেসার্স রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলসের কাছে সোনালী ব্যাংকের ২০১ কোটি ৪৩ লাখ ৫২ হাজার ৮৬৫ টাকা পাওনা খেলাপি হয়েছে। এই পাওনার বিপরীতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকায় গ্রুপটির কারখানাসহ ১০০ শতক জমি বন্ধক নিলামে তোলা হবে।

আরএসআরএম ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। আইপিওতে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ার ৩০ টাকা প্রিমিয়ামসহ ৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।

প্রিমিয়ামে আসা এই কোম্পানিটির উৎপাদন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ আছে।বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে ৪০ কোটি টাকা বকেয়া বিলের দায়ে। গত মার্চ মাস পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ৩ টাকা ৭৫ পয়সা লোকসান দিয়েছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে আরএসআরএমের শেয়ার বিক্রি হয়েছে ১৮ টাকা ৪০ পয়সা দরে।

 

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.