ডেনমার্কে গ্যাস বন্ধ করছে রাশিয়া

রুবলে দাম না দেওয়ার জন্য এর আগে পোল্যান্ডে গ্যাস দেওয়া বন্ধ করেছিল রাশিয়া। এবার বন্ধ করা হচ্ছে ডেনমার্কের গ্যাস। দেশের একটি প্রাকৃতিক গ্যাসের ফার্ম জানিয়েছে, রাশিয়া ইতিমধ্যেই গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। রাশিয়া ডেনমার্ককে জানিয়েছিল, তাদের রুবলে গ্যাসের দাম দিতে হবে। কিন্তু ডেনমার্ক তাতে রাজি হয়নি। এরপরেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া।

প্রাকৃতিক গ্যাসের সংস্থাটি জানিয়েছে, এখন তাদের কাছে যে পরিমাণ গ্যাস সঞ্চিত আছে, তাতে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তারা কোনোভাবেই রাশিয়ার দাবি মেনে নেবে না।

রাশিয়ার গ্যাস সংস্থাটি জানিয়েছে, সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্গত যে দেশগুলি ছিল, সেগুলি বাদ দিলে বাকি ইউরোপে তাদের গ্যাস সরবরাহ কমেছে প্রায় ২৭ শতাংশ। গত জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ক্রমশ গ্যাস সরবরাহ কমেছে বলে তারা জানিয়েছে। এরফলে তাদের বেশ খানিকটা ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়েছে বলেও সংস্থাটি জানিয়েছে। পোল্যান্ড, বুলগেরিয়ার মতো দেশে রাশিয়ার গ্যাস সম্পূর্ণ বন্ধ। ডেনমার্কেও এবার তারা গ্যাস দেয়া বন্ধ করল।

জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস নতুন একটি গ্যাস ফিল্ডের সন্ধান শুরু করেছে। উত্তর সাগরে অবস্থিত সেই গ্যাস ফিল্ডটি থেকে গ্যাস নেওয়া গেলে রাশিয়ার উপর ইউরোপের নির্ভরতা অনেকটাই কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নেদারল্যান্ডসের সরকার জানিয়েছে, নেদারল্যান্ডস এবং জার্মানির সীমান্ত থেকে উত্তর সাগরের ভিতরে ১০ নটিক্যাল মাইল, অর্থাৎ, ১৯ কিলোমিটার গেলে সমুদ্রের নীচে একটি বিরাট মাপের গ্যাস ফিল্ড আছে। নেদারল্যান্ডসের সরকার ইতিমধ্যেই ওই ফিল্ডটি থেকে গ্যাস তোলার পরিকল্পনা করার সবুজ সংকেত দিয়ে দিয়েছে। তবে জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্য এখনো সরকারকে সবুজ সংকেত দেয়নি। তার কারণ, ওই ফিল্ড থেকে গ্যাস তুললে পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে। বস্তুত, সে কারণেই এতদিন সেখান থেকে গ্যাস তোলা হয়নি। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই ফিল্ডটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরেই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের দাবি জানাচ্ছিল ইউক্রেন। শেষপর্যন্ত তাদের সেই সিস্টেম দিতে রাজি হলো জার্মানি। বুধবার জার্মান পার্লামেন্টে বক্তৃতা করার সময় চ্যান্সেলর ওলফ শলৎস জানান, জার্মানি ইউক্রেনকে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দেবে। শলৎস জানিয়েছেন, এই সিস্টেম ব্যবহার করে রাশিয়ার বিমান হানা থেকে শহরগুলিকে সম্পূর্ণভাবে রক্ষা করতে পারবে ইউক্রেন। যদিও কমবেশি ইউক্রেনের প্রায় সব শহরেই রাশিয়া হামলা চালিয়ে ফেলেছে। ক্ষতিও হয়ে গেছে যথেষ্ট। এছাড়াও অ্যামেরিকার সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে ইউক্রেনকে জার্মানি কিছু রকেট লঞ্চারও দিতে পারে বলে জানিয়েছেন চ্যান্সেলর।

উল্লেখ্য, অ্যামেরিকা আগেই জানিয়েছিল, তারা ইউক্রেনকে মাল্টি রকেট লঞ্চার দিয়ে সাহায্য করবে। শর্ত কেবল একটিই, ইউক্রেন ওই রকেট রাশিয়ার ভিতরে নিক্ষেপ করতে পারবে না।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে দ্বিতীয়বার মুখ খুললেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। বুধবার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেছিলেন তিনি। সেখানে তিনি বলেছেন, রাশিয়া যেভাবে যুদ্ধ চালাচ্ছে, হামলা করছে তা বর্বরোচিত। এ জিনিস কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। বিশ্ব যেভাবে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জার্মান সরকারের পদক্ষেপেরও তিনি প্রশংসা করেছেন। একইসঙ্গে ম্যার্কেল জানিয়েছেন, সাইডলাইনে বসে তিনি সরকারকে কোনো পরামর্শ দিতে চান না। সরকার নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেবে।

এদিকে ন্যাটো প্রধান জেন স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, ফের তুরস্কের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের। এই দুই দেশ ন্যাটোতে যোগ দিতে চায়। ন্যাটোও তাদের গ্রহণ করতে চায়। কিন্তু বাদ সেধেছে তুরস্ক। এ নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে ওই দুই দেশের প্রতিনিধির একবার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি। স্টলটেনবার্গ জানিয়েছেন, এরদোয়ান দ্বিতীয়বার আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন। সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এপি, এএফপি, ডিপিএ

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.