ধান কিনে মজুদ না করার নির্দেশ খাদ্যমন্ত্রীর

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ধান কিনে মজুত করার অসুস্থ প্রতিযোগিতা লক্ষ করা যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা ভালো পরিণতি আনবে না বলে সতর্ক করেন তিনি। পাশাপাশি ধান কেনা এবং চাল করে বাজারে ছাড়ার পরিমাণ রিপোর্ট আকারে খাদ্য বিভাগে পাঠানোরও নির্দেশ দেন তিনি।

রোববার সচিবালয়ে তার অফিস কক্ষে ‘বোরো ২০২২ মৌসুমে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ও বাজার মনিটরিং সংক্রান্ত অনলাইন মতবিনিময়’ সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই নির্দেশ দেন।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাখাওয়াত হোসেনসহ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলা প্রশাসক, কৃষি বিভাগের উপপরিচালক, খাদ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও মিল মালিকরা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ব্যবসায়ীদের কাছে জানতে চেয়েছেন, বোরো তোলার এই ভরা মৌসুমে মিলাররা বাজার থেকে ধান কিনলেও চাল উৎপাদনে যাচ্ছেন না। এখন বাজারে যে চাল পাওয়া যাচ্ছে, তা গত বছরের। তাহলে চলতি মৌসুমের নতুন ধান যাচ্ছে কোথায়?, সবাই প্রতিযোগিতা করে ধান কিনছেন, ভাবছেন ধান কিনলেই লাভ।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ অবস্থা চলতে দেয়া হবে না। কে কত পরিমাণ ধান কিনছেন এবং কে কত পরিমাণ চাল ক্র্যাশিং করে বাজারে ছাড়ছেন তা খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের রিপোর্ট আকারে প্রেরণ করতে হবে।’

সাধন চন্দ্র বলেন, ‘বিভিন্ন করপোরেট হাউস ধান-চালের ব্যবসা শুরু করেছে। তারা বাজার থেকে ধান কিনে মজুত করছে এবং প্যাকেটজাত করছে। প্যাকেটজাত চাল বেশি দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।’

এ সময় ধান চালের ব্যবসায় সম্পৃক্ত করপোরেট হাউসগুলোর সঙ্গে দ্রুততম সময়ে বৈঠক করতে খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, ‘ভারত থেকে গম দেয়া বন্ধ হচ্ছে গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, অথচ শুধু ভারত নয়, বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশকে গম দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়েছে।’

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘বোরো সংগ্রহ সফল করতে হবে, পাশাপাশি বাজার মনিটরিং চালিয়ে যেতে হবে। কেউ যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘কে কোন দল করে সেটি বিবেচ্য নয়, কেউ চালের বাজার অস্থিতিশীলের চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উত্তরাঞ্চলে ঝড় ও বৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি হয়েছে। কোন জেলায় কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার সঠিক হিসাব জানা জরুরি। উৎপাদন হিসাব ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা না গেলে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হবে না বলে জানান মন্ত্রী। এ সময় সঠিক তথ্য পাঠানোর জন্য কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।

নওগাঁ ধান ও চাল আড়ৎদার সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্য সংকট তৈরি হবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে। যার কারণে অনেকেই ভাবছেন আমাদের দেশে চালের ক্রাইসিস তৈরি হবে। তাই অনেকেই অবৈধ মজুত করছেন।’

এ ধরনের অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান তিনি।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.