হাফ সেঞ্চুরির পর ফিরলেন লিটন

ম্যাচ বাঁচানোর আশায় চার উইকেটে ৩৪ রান নিয়ে শেষদিনে ব্যাটিং শুরু করেছে বাংলাদেশ। এর আগে প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের করা ৩৬৫ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ৫০৬ রানে থেমেছে শ্রীলঙ্কা।

দিনের শুরুটা দেখেশুনেই করেছিলেন মুশফিক। এ দিনে আসিথা ফার্নান্দো করা প্রথম দুই ওভার মেইডেন দিয়ে শুরু করেন তিনি। আসিথার করা তৃতীয় ওভারে অবশ্য তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান তিনি।

সতর্ক শুরু করেন লিটন দাসও। তবে দিনের ষষ্ঠ ওভারে কাসুন রাজিথার করা শেষ বলে আম্পায়ার কট বিহাইন্ডের সিদ্ধান্ত দেন লিটনকে। যদিও লিটন রিভিউ নিলে দেখা যায় উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকওয়েলা বাম দিকে ঝাঁপিয়ে যে ক্যাচটি নেন সেটি আসলে লিটনের ব্যাটেই স্পর্শ করেনি।

রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান লিটন। এর এক ওভার পর অবশ্য আবারও আঘাত হানেন রাজিথা। লেংথ ডেলিভারিতে মুশফিকের স্টাম্প উড়িয়ে দেন তিনি। দিনের অষ্টম ওভারে ফেরার আগে মুশফিক করেন ৩৯ বলে ২৩ রান।

দলীয় ৫৩ রানে মুশফিক ফিরলে ব্যাটিংয়ে নামেন সাকিব আল হাসান। সতর্ক শুরুর ইঙ্গিত দেন তিনিও। তবে বাংলাদেশ শিবিরে আতঙ্ক ছড়ানো রাজিথার সামনে জ্বলে ওঠেন সাকিব। ২৫তম ওভারে কভার অঞ্চলে দুটি ও পয়েন্টে একটি, মোট তিনটি দৃষ্টিনন্দন চার হাঁকান সাকিব।

লিটন-সাকিব জুটি দ্রুতই ৫০ পেরিয়ে যায়। পুল শটে সাকিবের তিন রানে এই জুটির ৫০ রান আসে ৫৮ বলে। সাদা বলের ক্রিকেটের মেজাজে ব্যাট চালাতে থাকেন সাকিব। তাতে খুব দ্রুতই বাংলাদেশ একশ পেরিয়ে যায়। দিনের শুরুতে রাজিথা ও আসিথার ফাঁকে বোলিং শুরু করেন স্পিনার প্রবীণ জয়াবিক্রমা। তাকে কিছুটা দেখেশুনে খেলতে থাকেন লিটন-সাকিবরা। দলীয় ৩৫ ওভারে আক্রমণে আসেন আরেক স্পিনার রমেশ মেন্ডিস। সেই ওভারে বাংলাদেশ নেয় এক রান।

৩৮তম ওভারে জয়াবিক্রমার করা পঞ্চম ডেলিভারিটি কভার অঞ্চলে ঠেলে দিয়ে এক রান নেন লিটন। এই রানের মাধ্যমে টেস্ট ক্রিকেটে দুই হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। অষ্টম বাংলাদেশি হিসেবে এই রেকর্ডে নাম লেখান লিটন। এই মাইলফলক স্পর্শ করতে ৩৩ টেস্ট ও ৫৬ ইনিংস সময় নেন ২৭ বছর বয়সী এই ব্যাটার।

এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জয়াবিক্রমার ওপরেও নিয়ন্ত্রণ আনতে শুরু করেন লিটন-সাকিবরা। মেন্ডিসের ক্ষেত্রেও একই। সিঙ্গেলস, ডাবলস বা মাঝে মধ্যে চার হাঁকিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলতে থাকেন লিটন-সাকিব। ৪৩তম ওভারে মেন্ডিসের বল লিটনের বাম পায়ের হাঁটুতে লাগলে কিছুটা আঘাত পান তিনি। যদিও প্রাথমিক চিকিৎসায় সেরে ওঠেন তিনি।

দেখতে দেখতে লিডের দেখা পায় বাংলাদেশ। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে কভার অঞ্চলে ঠেলে দিয়ে দুই রান নেন লিটন। তাতেই লিড মিলে বাংলাদেশের। ধনঞ্জয়ার বলে কাউ কর্নারে চার হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন সাকিব। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটা সাকিবের ২৭তম হাফ সেঞ্চুরি। প্রথম সেশনের শেষ বলেই এই হাফ সেঞ্চুরি আদায় করেন সাকিব।

দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারেই কাঙ্খিত হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান লিটন। মেন্ডিসের ওভারের চতুর্থ বলটি লেগ সাইডে খেলে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। টেস্ট ক্যরিয়ারের ১৩তম হাফ সেঞ্চুরিটি হাঁকিয়েছেন ১৩০ বলে। হাফ সেঞ্চুরির পর উদযাপন করেননি লিটন।এই ওভারের পঞ্চম বলে জুটির শততম রান তুলে নেন সাকিব। লিটন-সাকিব জুটির শতরান আসে ১৫৯ বলে।

এদিকে হাফ সেঞ্চুরির পর বেশীক্ষণ উইকেটে থাকেননি লিটন। প্রথম ইনিংসের এই সেঞ্চুরিয়ান ফিরে যান ১৩৫ বলে ৫২ রান করে। সাকিব-লিটনের ১০৩ রানের জুটি ভাঙেন আসিথা। দ্বিতীয় সেশনের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে আসিথার লেংথ ডেলিভারিটি বুঝতে পারেননি লিটন। বলটি লিটনের ব্যাটে লেগে চলে যায় আসিথার হাতে। ধৈর্যশীল এই ইনিংসে ছিল তিনটি চারের মার। উইকেটে আছেন মোসাদ্দেক হোসেন।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.