পুঁজিবাজারে ১২শ পয়েন্ট সূচক খোয়াল পাকিস্তান

মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে পাকিস্তানের প্রধান পুঁজিবাজার করাচি স্টক এক্সচেঞ্জের (কেএসই) মূল্যসূচক থেকে ১২২২.৬৩ পয়েন্ট উধাও হয়ে গেছে। খবরে দ্য ডনের

আগাম নির্বাচনের দাবিতে লাহোর থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে আসা পাকিস্তানের সাবেক ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের রাজনৈতিক দল, পাকিস্তান তেহরিক ই-ইনসাফ (পিটিআই) ও পুলিশ বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সংঘাতের প্রভাব পড়েছে দেশটির প্রধান পুঁজিবাজার কেএসই-তে। এতেই আজ ২৫ মে,পতন হয় কেএসই’র প্রধান সূচক কেএসই-১০০। পতনে সূচকটি ৫৭২ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা ১.৩৭ শতাংশ হারায়, বেলা তখন ১২টা ৩৫ মিনিট।পাকিস্তান স্টক এক্সচেঞ্জ (পিএসক্স) সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

এর আগে (২৩ মে), দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত আর্থিক নীতি কঠোর হওয়াতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করতে থাকে। তাদের এ আতঙ্কে কেএসই-১০০ সূচকের ৬৫০ পয়েন্ট কমে যায়। পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম জিও নিউজ এ খবর জানায়।

এ দিন সূচকটি ১.৫৩ শতাংশ হারিয়ে ৪২,৪৪০.২৫ পয়েন্টে থেমে যায়। রাজনৈতিক উত্তাপ ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত কঠোর হওয়াতে এমন বেহাল অবস্থা হয় বাজারের। এতে ৩১৪ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয় যার মধ্যে ৪৮ টির অবস্থান ছিল সবুজ, ২৫০ টি লাল এবং ১৬ টি ছিল অপরিবর্তিত।

মোট লেনদেন হয়েছিল প্রায় ১১৯ মিলিয়ন শেয়ারের। এ তুলনায় শুক্রবার (২১ মে) হয়েছিল প্রায় ১৯০ মিলিয়ন শেয়ার।পাকিস্তান মুদ্রায় এ দিন লেনদেন হওয়া মোট অংকের পরিমাণ ছিল আরএস ৩.৫৭ বিলিয়ন।যেসব প্রতিষ্ঠান সেদিন দাঁড়াতে পারেনি-সিমেন্ট (-১২০.৮ পয়েন্টস), সার (-৮৯ পয়েন্টস), প্রোডাকশন (-৭৯.৯ পয়েন্টস), টেকনোলোজি (-৭২.৫ পয়েন্টস) ও ব্যাংক (-৬৩.১ পয়েন্টস)।

বাজার পতন প্রসঙ্গে, পাকিস্তানের শীর্ষ কোম্পানি আরিফ হাবিব কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও, আহসান মেহন্তি জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের পলিসি হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে বাজারে স্থবিরতা নেমে আসে। এ সপ্তাহে বিরোধী দলের সুষ্ঠ আগাম নির্বাচনের দাবিতে “আজাদী মার্চ” সমাবেশের আহবান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক মুদ্রানীতি ব্যাপক কঠোর হওয়াতে বাজারে ধস নামে।

জানা যায়, রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়াতে বাজার থেকে দেশীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগকৃত মূলধন তুলে নিচ্ছে। কারণ বিনিয়োগকারীরা দেখছে যে, সম্প্রতি সৌদি আরবের পাকিস্তানকে ৩শ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস সত্ত্বেও বাজার পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। অবশ্য এর পিছনে ডলারের বিপরীতে রূপির কমে যাওয়াকেও অনেকাংশে দায়ী বলে উল্লেখ করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটিজের রিসার্চ হেড, রাজা জেফরি জানিয়েছেন যে, রাস্তায় সরকার ও বিরোধী দলের সঙ্গে সংঘর্ষের ঝুঁকির কারনে বাজার সূচক স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিচে নেমে এসেছে।

অনেকেই আগেভাগে শেয়ার বিক্রি করার জন্য জোর দিচ্ছে।তারা মনে করছে যে, ইমরান খানের ডাকা লংমার্চের কারণে দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিণতির অবনতি হতে পারে।
‘আইএমএফ থেকে বেইলআউট প্যাকেজ না পেলে বাজার আরও রসাতলে যাবে’ এমন আশঙ্কা করে আলি হাবিব সিকিউরিটিজের বিক্রয় পরিচালক সালমান নাকভি বলেন, এছাড়া তাদেরকে (বিনিয়োগকারীরা) অবহিত করা হয়েছে যে, সরকার পরবর্তী বাজেটে তাদের উপর কাছ থেকে মোটা অংকের কর আদায় করতে পারে।

 

অর্থসূচক/এইচডি/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.