বাংলাদেশে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বেচতে চায় রাশিয়া

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল অবিক্রিত রয়েছে। আর সেই তেল বাংলাদেশকে দিতে চায় রাশিয়া। তাই অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বাংলাদেশকে বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে রাশিয়া।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, রাশিয়ার পক্ষ থেকে তেল বিক্রির প্রস্তাব এসেছে। বিশেষ করে ক্রুড অয়েলের কথা বলছে তারা। আমরা সেই প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখছি।

সোমবার (২৩ মে) বিদ্যুৎ ভবনে একটি কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান প্রতিমন্ত্রী।

যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের পরে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ রাশিয়া আগে প্রতিদিন প্রায় ৫ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করত, যার অর্ধেকের বেশি যেত ইউরোপে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে সেই তেল রপ্তানির সুযোগ ব্যহত হয়। নিষেধাজ্ঞার মুখে অন্য ক্রেতারা রুশ তেল কেনা থেকে পিছু হটলেও বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ তেল আমদানিকারক ও ভোক্তা দেশ ভারত সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যাপক মূল্য ছাড়ে তাৎক্ষণিক টেন্ডারের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে বাড়তি তেল কেনা শুরু করেছে। চীনও আবার রাশিয়া থেকে তেল কেনা বাড়িয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর এসেছে।

জানা গেছে, এমনিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেল কিনতে অন্য দেশের বাধা নেই। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে রাশিয়া থেকে ভারতের অতিরিক্ত তেল কেনার বিষয়টি যে যুক্তরাষ্ট্র ভালোভাবে নেয়নি, তা স্পষ্ট করেই বলেছে ওয়াশিংটন।

তবে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রস্তাবে ঠিক কী আছে, কত দরে কী পরিমাণ তেল রাশিয়া দিতে পারবে, মূল্য পরিশোধই বা কীভাবে হবে, সেসব বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী।

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে জ্বালানির দাম কমানোর সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা জ্বালানির দামটা স্থিতিশীল রাখতে চাই। বাড়াতেও চাই না, কমাতেও চাই না। দাম যতটুকু কমেছে, তাতে করে এখনই সমন্বয় করার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।

বাংলাদেশ বর্তমানে প্রতি বছর ৫০ লাখ টন ডিজেল, ১৩ লাখ অপরিশোধিত তেল, দুই লাখ টন ফার্নেস অয়েল এবং ১ লাখ ২০ হাজার টন অকটেন আমদনি করে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় ভর্তুকি দিয়ে দেশের বাজারে বিক্রি করতে সরকারকে প্রতিদিন ১৫ কোটি ডলারের ওপর লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে গত মার্চের শেষে জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

অর্থসূচক/এইচডি/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.