কক্সবাজার হবে আন্তর্জাতিক রিফুয়েলিংয়ের জায়গা: প্রধানমন্ত্রী

কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকে রূপ দেওয়া, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ফুটবল স্টেডিয়াম করা এবং আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার নানা উদ্যোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক সময় এ কক্সবাজারই হবে আন্তর্জাতিক আকাশ পথে রিফুয়েলিংয়ের জায়গা।

বুধবার (১৮ মে) কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নবনির্মিত বহুতল ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার চমৎকার একটা জায়গা। এটা পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা একান্তভাবে অপরিহার্য। সে জন্য কক্সবাজারবাসীর কাছে আমার একটা অনুরোধ থাকবে যেখানে যত্রতত্রভাবে কোনো স্থাপনা করবেন না। কক্সবাজারে আমরা অনেকগুলো প্রকল্প নিয়েছি। পুরো কক্সবাজার ঘিরে একটা মাস্টারপ্ল্যান করার আমরা নির্দেশ দিয়েছি। এর উন্নয়নটা যাতে অপরিকল্পিতভাবে না হয়ে পরিকল্পিতভাবে হয়।

তিনি বলেন, আমাদের এ যে বিশাল সমুদ্রসীমা রয়েছে এটাকে পর্যটনের ক্ষেত্র হিসেবে আরও প্রসারিত করা। আবার দেশীয় পর্যটকদের জন্য সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় করা। এ উদ্যোগটাই আমরা নিতে চাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক এয়ার রুটে পড়ে। আমরা কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি। এই বিমানবন্দরটি যখন হবে, তখন পশ্চিমা দেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশে যারা যায়, তারা কিন্তু এই কক্সবাজার থেকেই রিফুয়েলিং করবে।’

তিনি বলেন, কারণ রিফুয়েলিং কিন্তু একেক সময় একেকটা দেশ অগ্রাধিকার পায়। এক সময় হংকং ছিল। এরপরে আমরা দেখেছি থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর। এখন দুবাই। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কক্সবাজারই হবে আন্তর্জাতিক আকাশ পথে রিফুয়েলিংয়ের একটা জায়গা। তার ফলে এখানে অনেক কাজ হবে। আমরা ক্রিকেট স্টেডিয়াম করেছি। সেখানে ফুটবল স্টেডিয়াম হবে। সেখানে অন্যান্য খেলাধুলার পুরো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট এখানে যাতে হতে পারে সে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘এত দূরদর্শী নেতৃত্ব ছিল আপনারা দেখেন ১৯৭৪ সালে তিনি সমুদ্রসীমা আইন করেন। এমন কী জাতিসংঘও কিন্তু তখন করেনি। জাতিসংঘ করেছে ৮২ সালে। কিন্তু ১৯৭৪ সালে এ বিশাল সমুদ্রে আমাদের যে অধিকার রয়েছে সে অধিকার নিশ্চিত করার জন্যই জাতির জনক এ আইনটি করে দিয়ে যান। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ৭৪ সালে তিনি আইন করেন, ৭৫ সালে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এরপর যারা ক্ষমতা দখল করেছিল তারা কিন্তু এ সমুদ্রসীমায় আমাদের যে অধিকার আছে তা নিয়ে কখনোই কোনো উদ্যোগই নেননি।’

তিনি বলেন, ‘৯৬ সালে সরকার গঠন করার পর আমি প্রথম এ উদ্যোগ নেই। কিন্তু এটা নিতে গেলে অনেক তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করে কাজ করতে হয়। আমরা অনেক দূর কাজ করে যাই। কিন্তু এরপরে ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত আমরা দেখেছি তখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা এসে তখন থেকে আবার উদ্যোগ নেই। সমুদ্রসীমায় আমাদের যে অধিকার আজ তা প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন এ সমুদ্র সম্পদকে ব্যবহার করে আমাদের অর্থনীতিতে যাতে অবদান রাখতে পারি সে ব্যবস্থা করতে চাই। তাই আমরা সুনীল অর্থনীতি (ব্লু-ইকোনমি) আমরা হাতে নিয়েছি। এরই ভিত্তিতে আমরা উন্নয়ন আরও তরান্বিত করতে চাই।’

কক্সবাজার প্রান্তে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.