এলো খুশির ঈদ

করোনা ভাইরাস মহামারীর ধাক্কায় দুই বছর স্বাভাবিকভাবে উদযাপন করতে না পারা ঈদুল ফিতর এবার এসেছে ভিন্ন আবহ আর ধকল কাটিয়ে ওঠা স্বাভাবিকতা নিয়ে। এবার রমজান মাস ত্রিশ দিনে পূর্ণ হয়েছে। ফলে সোমবার সন্ধ্যায় শুরু হয়েছে ঈদের মাস শাওয়ালের। মঙ্গলবার সারাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে।

ঈদের দিনের আগের রাত দেশের মানুষের কাছে চাঁদরাত নামে পরিচিত। অর্থাৎ সোমবার দিবাগত রাত পার হলেই ঈদের সকাল। এরইমধ্যে বাড়িতে বাড়িতে নানা রকম রান্নার আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নারীরা। অনেকেই সেরে নিচ্ছেন শেষ মুহুর্তের কেনাকাটা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা-বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একমাস সিয়াম সাধনার পর আবার এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর মানেই খুশি ও আনন্দ। আসুন, আমরা সবাই মিলে ঈদুল-ফিতরের আনন্দ উপভোগ ও ভাগাভাগি করি।’

ঈদের আগের দিন আজ সোমবার পর্যন্ত টানা ১১ দিন দেশে করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি। এ পর্যন্ত করোনায় মোট মারা গেছে ২৯ হাজার ১২৭ জন। এছাড়া মোট শনাক্ত হয়েছে ১৯ লাখ ৫২ হাজার ৭২৬ জন। যদিও এবারের ঈদে জনসাধারণের জন্য করোনা নিয়ে কোনও বিধি নিষেধ নেই।

এবার জাতীয় ঈদগাহেও ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণত রাষ্ট্রপতি রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঐতিহ্যবাহী ঈদের নামাজে অংশ নেন। গেলো দুই বছরের মতো এবারও স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবন দরবার হলে তার পরিবারের সদস্য ও কয়েকজন কর্মকর্তাসহ ঈদের নামাজ আদায় করবেন। বঙ্গভবনে ঈদের জামাত সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিত হবে।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ৫টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। এরপর পর্যায়ক্রমে ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে শেষ ঈদ জামাত।

এবার রোজা ৩০টি পূর্ণ হওয়ায় ঈদ হচ্ছে ৩ মে মঙ্গলবার। ফলে ঈদের ছুটি ২ মে থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ৪ মে বুধবার। অপরদিকে ১ মে রবিবার শ্রমিক দিবসে সরকারি ছুটি ছিল। আর আগের দিন ৩০ এপ্রিল শনিবার, ২৯ এপ্রিল শুক্রবার। ফলে ২৯ এপ্রিল থেকে ৪ মে পর্যন্ত টানা ৬ দিনের সরকারি ছুটি। ঈদের ছুটির পর ৫ মে বৃহস্পতিবার। তারপর ৬ ও ৭ মে (শুক্র ও শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটি। ফলে চাকরিজীবীরা অনেকে ৫ মে একদিন ছুটি নিয়ে মোট ৯ দিনের ছুটিতে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারছেন।

লম্বা ছুটি পাওয়ায় অনেকেই দেশে ভেতরে ও বিদেশে বেড়াতে যাচ্ছেন। কক্সবাজারে বিপুলসংখ্যক পর্যটক সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এ জন্য হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলো ধোয়া-মোছাসহ পর্যটক বরণে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ঈদের পর থেকে সপ্তাহ দুয়েকের জন্য হোটেলের অগ্রিম বুকিংও হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ঈদের ছুটিতে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। দৃশ্যমান টহল ছাড়াও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জনসাধারণের নিরাপত্তা। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও মাঠে কাজ করবে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। কোনও ধরনের হুমকি নেই। তারপরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় নেই কোনও ঘাটতি।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.