আবুল মাল আবদুল মুহিত আর নেই

সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আর নেই। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।

তাঁর ছোটভাই পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. মোমেনের দপ্তর থেকে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বার্ধক্যের নানা জটিলতায় সাবেক অর্থমন্ত্রী বেশ কিছুদিন থেকে অসুস্থ ছিলেন। মাঝে তাকে কয়েক দফায় হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়।

মুহিতের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা বাচ্চু মিয়া বলেন, স্যার আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। শ্বাসকষ্ট ও সুগার ফল্ট করে তার। সকাল ৭টায় নিজের হাতে আমি স্যারকে খাইয়েছি। সারাদিন অসুস্থ ছিলেন। স্যার রাত সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে মারা গেছেন। তার মরদেহ এখন ইউনাইটেড হাসপাতালে আছে।

পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশান আজাদ মসজিদে মুহিতের প্রথম নামাজে জানাজা হবে। এরপর সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংসদ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

দুপুর ১২টায় তার মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। এরপর দাফনের জন্য তার মরদেহ জন্মস্থান সিলেটে নেওয়া হবে।

আবুল মাল আবদুল মুহিত ১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা সৈয়দা শাহার বানু চৌধুরী ও বাবা আবু আহমদ আবদুল হাফিজ। মা-বাবা দুইজনই তৎকালীন সিলেট জেলার রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৪ ভাইবোনের মধ্যে তার অবস্থান তৃতীয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তার ছোট ভাই।

আবদুল মুহিত ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি অর্জন করেন। পরের বছর একই বিষয়ে অর্জন করেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। ছাত্রজীবনে সলিমুল্লাহ হল ছাত্র সংসদে ছিলেন। ১৯৫৬ সালে তিনি যোগ দেন সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে (সিএসপি)।

১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তান দূতাবাসে কর্মরত থাকার সময় বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন মুহিত। এরপর প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠন করেন। এ কারণে তাঁকে ২০১৬ সালে রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ দেওয়া হয়। তাঁর লেখা বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ৪০টির মতো বই রয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে প্রথম তিনি অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে সিলেট-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ফের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি দেশের হয়ে জাতীয় সংসদে সর্বোচ্চ সংখ্যক বাজেট পেশ করেছেন।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.