করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে ভোজ্য তেলের দাম যখন প্রতিদিন বেড়ে চলেছে , এমন সময়ে পাম অয়েলের শীর্ষ উৎপাদক ও রপ্তানিকারী দেশ ইন্দোনেশিয়া আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেল ও তেলের প্রধান কাঁচামাল পাম ফল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে এটি কার্যকর হবে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদাদো।
দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইদাদো জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ বাজারে ভোজ্য তেলের দাম সাধারণ মানুষের লাগামের মধ্যে রাখতে বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শনিবার এক বিবৃতিতে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আগামী সপ্তাহ থেকে পাম অয়েল ও পাম অয়েলের কাঁচামাল রপ্তানি বন্ধ থাকবে। অভ্যন্তরীণ ভোজ্য তেলের বাজার স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে।এখন থেকে দেশের ভোজ্যতেলের বাজার পরিস্থিতি আমি নিজে পর্যবেক্ষণ করব।’ গত নভেম্বর থেকে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রে বাড়তে শুরু করে ভোজ্য তেলের দাম।
দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহামারির জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্য তেলের দাম চড়তে থাকায় ব্যবসায়ীদের ব্যাপক হারে তেল রপ্তানিই মূলত এই মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী। বাজারে লাগাম টানতে জানুয়ারি থেকে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার সরকার।
এসবের মধ্যে রয়েছে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, ভোজ্য তেলের মূল্য নির্ধারণ ও ভর্তুকি প্রদান; কিন্তু তাতেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না তেলের বাজার। এদিকে, বিভিন্ন এলাকার বহু মুদি দোকান থেকে পাম অয়েল ‘গায়েব’ হয়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে অসন্তোষ শুরু হওয়ার পরিস্থিতি তৈরী হচ্ছিল। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তেল রপ্তানির অভিযোগে ইন্দোনেশিয়ার তিনটি বড় পাম অয়েল প্রস্তুতকারী কোম্পানির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয় গত সপ্তাহে।
এছাড়া, দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানিকে তেল রপ্তানির অনুমোদন পত্র (পারমিট) পাইয়ে দেওয়ার জন্য ইন্দোনেশিয়ার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অভিযুক্তও করেছে দেশটির সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে ভোজ্যতেল হিসেবে মূলত পাম অয়েলেই ব্যবহার করেন লোকজন। এছাড়া প্রসাধান ও চকলেট শিল্পে ব্যবহারের জন্য বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত পাম অয়েলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.