লাইনে দাঁড়িয়ে পানি নিচ্ছে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীরা, মিলছে না সমাধান

মামুনূর রহমান হৃদয়, তিতুমীর কলেজ থেকে: রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে সুফিয়া কামাল ছাত্রীনিবাসে পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। দিনে সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন ঘন্টার জন্য পানি আসে। এ ছাড়া ওয়াসার গাড়ি থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে শুধু খাবার পানি দেওয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলেও দাবি করেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ফলে মাসখানেক ধরেই গরমের মৌসুমে পানির তীব্র সংকটে পড়ছেন তারা। এদিকে হলের দায়িত্বরত শিক্ষককে জানানোর পরেও পাওয়া যাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত ফলাফল।

হলে থাকা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এক মাস যাবৎ পানির কষ্টে দিনাতিপাত করছি । নতুন মোটর দেওয়ার পরেও কেন পানির সংকট! ওয়াসা থেকে গাড়ি এসে পানি দিচ্ছে। লাইনে করে আমরা খাবার পানি নিচ্ছি। তাতেও সবার পর্যাপ্ত হচ্ছে না। পানির অভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতারও ব্যাঘাত ঘটেছে। জামা-কাপড় কিংবা মেঝে অপরিষ্কার হয়ে আছে সবকিছু।

শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, হলে বছরব্যাপী নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। শিক্ষার্থী ওঠানোর নেই কোন নির্দিষ্ট নীতিমালা। তাছাড়া গণরুমে এতো শিক্ষার্থী যে গরমে অসহনীয় কষ্ট সহ্য করতে হয়। এছাড়াও হলের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কোন আইডি কার্ডের ব্যবস্থা নেই। কোন শিক্ষার্থীর যদি কারণবশত হলে পৌঁছাতে বিলম্ব হয় সেক্ষেত্রে ঐ শিক্ষার্থীর নানা জটিলতায় হলে প্রবেশ করতে হয় বলেও জানান ভুক্তভোগীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, কিছু কিছু রুমে মাসব্যাপী পাখা নষ্ট, তাছাড়া সন্ধ্যা নামতেই মশার প্রকোপ শুরু হয়ে যায়। মশার যন্ত্রনায় পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এর পেছনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবকেই দায়ী করছেন তারা। কিন্ত তাতেও যেন কর্তৃপক্ষের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। যদি পানি আসার নির্দিষ্ট সময় থাকে সে ক্ষেত্রে আরও ট্যাংকের ব্যবস্থা করা হোক । শিক্ষার্থীর পরিমাণ বেশি থাকায় পানির জন্য একটি ট্যাংক যথেষ্ট না। প্রয়োজন হলে ডিপ টিউবওয়েল বসানো যেতে পারে। তাহলে আমাদের ওয়াসার পানির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।

হলের দায়িত্বরত শিক্ষিকা দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ওয়াসা থেকে যে পানি আসে সে পানির হচ্ছে দুটি লাইন । একটি কলেজের আরেকটি হলের। যখন কলেজে পানি দেওয়া হয় তখন হলের লাইন বন্ধ থাকে আর যখন হলে পানি দেওয়া হয় তখন কলেজের লাইন বন্ধ থাকে। এই জন্য পানির সংকট তৈরি হয়েছে। প্রতি বছর এই সময়টাতে আমাদের পানির সমস্যা দেখা দেয়।

তিনি আরও বলেন, হলে প্রতি বছর এই সময়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। তবে অনিবার্য কারণবশত মানবিক দিক বিবেচনায় কখনো কখনো নির্দিষ্ট সময়ের বাইরেও শিক্ষার্থী হলে ভর্তি করা হয়। হলের কয়েকটি পাখা নষ্টের খবরও আমরা পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমারা বেশ কয়েকটি পাখা ঠিক করেছি। অভিযোগ পেলে আরও ঠিক করার ব্যবস্থা করা হবে।

মশার উপদ্রব বন্ধে করণীয় পদক্ষেপ সম্পর্ক তিনি বলেন, হলের চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য লোকবল নিয়োজিত রয়েছে। এ ছাড়াও হল আইডি কার্ড সম্পর্কে তিনি বলেন, খুব শীঘ্রই আমরা হল আইডি কার্ড শিক্ষার্থীদের প্রদান করব। হলের শিক্ষার্থীদের জন্য অতিব জরুরি বিষয় এটি।

এই বিষয়ে তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক তালাত সুলতানা বলেন, শিক্ষার্থীর পরিমাণ বেশি হওয়ায় পানির সমস্যা দেখা দিয়েছে। উক্ত সমস্যা সমাধানে নিয়মিত ওয়াসা থেকে পানি দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও পানির সমস্যা সমাধানে মোটর বসানো হয়েছে। মশার উপদ্রব, পাখা নষ্ট কিংবা হল আইডি কার্ড সম্পর্কে দায়িত্বরত শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.