প্রথমবারের মতো প্রকাশিত হলো পূর্ণাঙ্গ মানব জিনোম সিকুয়েন্স 

দীর্ঘ গবেষণার পর অবশেষে সম্পূর্ণ মানব জিনোম প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।বিশ্বের ৭.৯ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে রোগ-সৃষ্টিকারী মিউটেশন এবং জিনগত পরিবর্তন সম্পর্কিত সূত্রের সন্ধানে নতুন দুয়ার খোলা হয়েছে বলে মনে করছেনবিজ্ঞানীরা । বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল জিউম্যান জিনোম রিসার্চ ইন্সটিটিউট এ তথ্য জানায়।

২০০৩ সালে মানুষের জিনোম সিকুয়েন্স প্রকাশিত হলেও তখনও  প্রায় ৮ শতাংশ জিনোমের পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়নি। কারণ, ডিএনএ’র পুনরাবৃত্তিমূলক কিছু অংশ রয়েছে যা বাকি অংশগুলোর সঙ্গে মেশানো কঠিন।তবে এবার পুরো সিকুয়েন্সই সফলভাবে প্রকাশ করতে সক্ষম হন বিজ্ঞানীরা। গবেষণা পত্রটি গত বছর পিয়ার রিভিউয়ের জন্য প্রাথমিকভাবে প্রকাশিত হয়।

ন্যাশনাল জিউম্যান জিনোম রিসার্চ ইন্সটিটিউটের পরিচালক ইরিক গ্রিন বলেন, “মানব জিনোমের সম্পূর্ণ সিকোয়েন্স উন্মোচন করাটা সত্যিই এক যুগান্তকারী সাফল্য, যার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আমাদের ডিএনএ ব্লুপ্রিন্টের সামগ্রিক চিত্রের দেখা মিলবে।”

“এসব তথ্য ভিত্তিমূল স্থাপনকারী, যা মানুষের জিনোমের সূক্ষ্ম কার্যক্রম বোঝার প্রচেষ্টাকে সাহায্য করবে। মানুষের বিভিন্ন রোগের জেনেটিক কার্যকরণ বিশ্লেষণের গবেষণাকেও তা শক্তিশালী করবে,” বলেন গ্রিন।

ডিএনএ-র বেজ পেয়ার দিয়ে মানুষের ক্রোমোজোম ও জিন গঠিত। পূর্ণাঙ্গ সিকুয়েন্সে তিন বিলিয়নের বেশি বেজ পেয়ার রয়েছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৯৬৯টি জিন প্রোটিন এনকোড করে। এই জিনগুলোর মধ্যে বিজ্ঞানীরা নতুন দুই হাজার জিন চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে ১১৫টি এখনও সক্রিয় রয়েছে বলে ধারণা।এছাড়া বিজ্ঞানীরা আরও ২০ লাখ জেনেটিক ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করেছেন, যার মধ্যে ৬২২টি চিকিৎসা সম্পর্কিত।

গবেষক দলের প্রতিনিধি অ্যাডাম ফিলিপি এক বিবৃতিতে বলেন, “ভবিষ্যতে কারও জিনোম সিকুয়েন্স করা হলে আমরা তাদের ডিএনএ-র সকল ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করতে পারব। এর ফলে তাদের স্বাস্থ্যসেবা পরামর্শ দেওয়াও সহজ হবে।”

“শতভাগ জিনোম সিকুয়েন্স করা নতুন চশমা চোখে পরার মতোই। এখন আমরা পরিষ্কারভাবে সব দেখতে পারছি। এর সবটাই বুঝে উঠতে আমরা এখন আরও এক ধাপ এগিয়ে,” বলেন তিনি।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.