প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন আজ

শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) পঞ্চম শীর্ষ সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে আজ। এ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে গত ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সরকার প্রধানদের পঞ্চম বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে ‘বিমসটেক সনদ’ স্বাক্ষরের প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে সনদটি বিমসটেক ফোরামকে বাংলাদেশসহ বঙ্গোপসাগর এলাকাকে একটি টেকসই শান্তিপূর্ণ ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সাহায্য করবে।’

ড. মোমেন বলেন, সনদটি এ ফোরামকে সমন্বিত প্রচেষ্টা, অর্থপূর্ণ সহযোগিতা এবং গভীর সংহতির মাধ্যমে গতিশীল, কার্যকর ও উৎপাদনশীল আঞ্চলিক সংগঠনে পরিণত করতে সহায়তা করবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর অন্যান্য সমকক্ষের মতো ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে যোগ দেবেন। এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রতিনিধিরা কলম্বোতে সশরীরে উপস্থিত থাকবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সনদ ছাড়াও শীর্ষ সম্মেলনে আরও তিনটি চুক্তি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এবং ‘পরিবহণ সংযোগের জন্য বিমসটেক মাস্টার প্ল্যান’সহ বহু কাঙ্ক্ষিত দুটি নথি সরকার প্রধানদের দ্বারা গৃহীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিমসটেক পরিবহণ সংযোগের বিষয়ে ঢাকা একটি জোরালো প্রস্তাব দিয়েছে, ‘আমরা (বাংলাদেশ) যোগাযোগের কেন্দ্রবিন্দু।’

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ কানেক্টিভিটির ওপর অনেক জোর দিয়েছে কারণ ‘আমরা বিশ্বাস করি, কানেক্টিভিটিই উৎপাদনশীলতা’।

এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন জানান, বাংলাদেশ বিমসটেক সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুটিও উত্থাপন করবে, যেখানে মিয়ানমার অন্যতম সদস্য রাষ্ট্র। আমরা যেখানেই যাই, রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপন করি। মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

ড. মোমেন কলম্বোতে শীর্ষ সম্মেলনের আগে ২৯ মার্চ বিমসটেকের ১৮তম বিমসটেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। পরিবহণ সংযোগের জন্য বিমসটেক মহাপরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি কোনো চুক্তি নয় বরং এটি আঞ্চলিক নেতাদের একটি স্বপ্ন।

শাহরিয়ার আলম বলেন, বিমসটেক সদস্য দেশগুলোর মধ্যে কানেক্টিভিটির ৭০ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে সদস্য দেশগুলোর নিজস্ব অর্থায়নে সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশের কক্সবাজার পর্যন্ত রেল সংযোগ বৃহত্তর বিমসটেক পরিবহণ সংযোগের অংশ। আমরা আশা করি, সে দিন আর অত দূরে নয়, যখন মানুষ রেল বা সড়কপথে থাইল্যান্ড যেতে পারবে।

বিমসটেক একটি আঞ্চলিক সংস্থা, যার সাতটি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে পাঁচটি দক্ষিণ এশিয়ার—বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুটি—মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড। বিমসটেক ১৯৯৭ সালে ৬ জুন বাংলাদেশসহ চারটি সদস্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত। এখন সংস্থাটির বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সংযোগ ও শক্তি থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা পর্যন্ত সহযোগিতার বিস্তৃত ক্ষেত্র রয়েছে।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.