আ.লীগকে সরাতে না পারলে দেশ আরও সংকটে পড়বে: ফখরুল

আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে সরাতে না পারলে দেশ আরও সংকটে পড়বে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে সরানো। তা না হলে তাদের দুর্বৃত্তায়ন থামবে না। সেই লক্ষ্যে বিভেদ ভুলে সব রাজনৈতিক দলগুলোকে একই প্ল্যাটফর্মে আসতে হবে। বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে।

শনিবার (১২ মার্চ) সকালে সাবেক মন্ত্রী মরহুম মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

মশিউর রহমান যাদু মিয়া মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটি ‘কোভিড পরবর্তী নতুন বিশ্বব্যবস্থায় বাংলাদেশের রাজনীতিক অর্থনীতি ও বিশ্ব পরিস্থিতির নিরিখে নির্বাচনী গ্রহণযোগ্যতা কর্তৃত্ববাদী সরকারি অবস্থান’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, যেভাবে ৬৯, ৭১ এবং ৮৯ সালে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, সেভাবেই আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন তৈরি করতে হবে। এরপর জনগণের ভোটে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৪-১৫ বছরে দেশের রাজনীতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতাসীনরা দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। ভিন্নমতের মানুষদের দমন করছে। তারা মানুষের কথা বলার অধিকার, লেখার স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। তার কারণ এই সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। প্রতিনিয়ত মানুষের অধিকার খর্ব হচ্ছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণহীন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই। বরং তারা মিথ্যা তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে দেশের মানুষকে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্ত করছে।

আওয়ামী দুঃশাসনের পরিস্থিতিকে ১৯৭১ সালের পাকিস্তানের চেয়েও খারাপ বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি ৭১ সালের চেয়েও খারাপ। কারণ সেসময় পাকিস্তানিরা ঘোষণা দিয়ে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করত। কিন্তু এখন আওয়ামী লীগ ঘোষণা ছাড়াই জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ  করেছে। তারা মানুষকে নিপীড়ন করছে।

যাদু মিয়ার স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মশিউর রহমান যাদু মিয়া তার দল ন্যাপ-ভাসানী বিলুপ্ত করে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে সম্পৃক্ত থেকে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করতে অনন্য ভূমিকা পালন করেছেন। পরে দেশের আর্থ-সামাজিক, ভূ-রাজনৈতিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। সেই থেকেই দেশের অর্থনীতির শক্ত ভিত রচিত হয়। আজ যার সুফল ভোগ করছেন দেশের কোটি কোটি মানুষ।

সভায় শিক্ষাবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, মানব সমাজ চিরকাল এক রকম থাকে না। এটি পরিবর্তনশীল। তেমনভাবেই মহামারি করোনা কারণে আজ বিশ্বের অনেক কিছুতে পরিবর্তন এসেছে। দেশের পরিবর্তন সাধনে মশিউর রহমান যাদু মিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। আজ আমাদের কথা বলতে চিন্তা-ভাবনা করতে হয়। দেশের চলমান সংকটময় পরিস্থিতি উত্তরণে সব রাজনৈতিক দল ও মতের ঐক্য দরকার।

আমেরিকার স্টেইট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্কের শিক্ষক মোহাম্মদ ইমরান আনসারীর পরিচালনায় সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, যাদু মিয়ার কন্যা রিটা রহমান, কানাডার ডউসন কলেজের শিক্ষক ড. আবিদ বাহার প্রমুখ।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.