পাহাড়প্রেমী এবং ভ্রমণপিপাসুদের পছন্দের শীর্ষে “বাংলাদেশের পাহাড়শুমারি”

বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকাই সমতল। সবুজ ফসলের মাঠ কিংবা নদীতে জাল ফেলে মাছ ধরার চিত্রই বেশিরভাগ সময় তুলে ধরে আমাদের ছোট্ট এই মায়াভরা ব-দ্বীপটিকে। তাই বুঝি এ দেশের মানুষের গায়ে শিহরণ জাগানো এক ভালোলাগার নাম পাহাড়। অধিকাংশ সমতল হলেও আমাদের দেশের দক্ষিন-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়গুলো এবং পাহাড়ের গহীনে লুকিয়ে থাকা ঝিরি-ঝর্নাগুলোর প্রতি দিন দিন আকর্ষণ বেড়েই চলেছে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের। যার প্রভাবে গহীন পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে গড়ে উঠছে এক সম্ভাবনাময় পর্যটন।

আর পাহাড়প্রেমী এমন কিছু পর্যটকদের আকর্ষনের শীর্ষে রয়েছে লেখক ও গবেষক জিয়াউল হকের পাহাড় নিয়ে লিখা বই “বাংলাদেশের পাহাড়শুমারি”। পাহাড়নিয়ে গবেষণাধর্মী এই বইটি গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মোড়ক উন্মোচনের মাধ্যমে বইমেলার ৩৪ নম্বর স্টলে প্রকাশিত হওয়ার পর গত দশ দিনেই বইটির ১৫০ কপি পাঠকদের কাছে বিক্রি হয়ে যায়।

বইটি সম্পর্কে জানতে চাইলে মিতু আহমেদ নামের একজন পাঠক অর্থসূচককে জানান, “আমি ভ্রমণ করতে ভালোবাসি, বেশিরভাগ সময় পাহাড়েই ভ্রমণ করে থাকি। বইটি পড়ে আমি বাংলাদেশের বেশকিছু পাহাড়ের বিভিন্ন রকমের প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পেড়েছি। এছাড়াও বইটিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন ভৌগলিক তথ্য, ঝর্নার তথ্য এবং আরও বেশ কিছু পাহাড়ি অববাহিকার প্রয়োজনীয় বেশ কিছু তথ্য রয়েছে।“

বাংলাদেশের পাহাড়শুমারি ছাড়াও লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল হক লিখেছেন গিরিঝরনা বাংলাদেশ, ভ্রমণ কাহিনী সহ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই শত মুক্তিযোদ্ধার বিজয়গাথা ১-৪, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ইতিহাস, রক্তে ভেজা শার্ট ইত্যাদি।

বাংলাদেশের পাহাড়শুমারি প্রসঙ্গে জিয়াউল হক অর্থসূচককে জানান, “বাংলাদেশের পাহাড়শুমারি এদেশের পাহাড়ের উপর রচিত প্রথম কোষগ্রন্থ বা ইনসাইক্লোপিডিয়া। আদমশুমারির মতো পাহাড়শুমারি বা পাহাড়ের তালিকা করা সত্যিই একটা অনবদ্য কাজ। কানাডাতে প্রতিটা গাছের পৃথক নাম্বার দিয়ে তার তালিকা করা হয়ে থাকে। যার ফলে প্রতিটা গাছের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ সজাগ থাকতে বাধ্য হন। আমাদের দেশে প্রকৃতি ধ্বংস, গাছ ধ্বংস, পাহাড় ধ্বংস নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনাতে পরিণত হয়েছে। পাহাড় দস্যুরা যদি জানতে পারে এদেশের সকল পাহাড়ের নামের তালিকা করা হয়ে গেছে, তাহলে তারা হয়তোবা পাহাড় ধ্বংস থেকে নিজেদের কিছুটা হলেও সংযত রাখবে বলে আমার মনে হয়। তাছাড়া এই গ্রন্থ সরকারি কর্মকর্তাগণের দায়িত্বও অনেক গুন বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করি। কারণ যে পাহাড়গুলোর নাম তালিকাভূক্ত হয়ে গেছে, তা সংরক্ষণ করা তাদের দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে।“

তিনি আরও বলেন, “এই বই থেকে পার্বত্য এলাকার প্রতি ইঞ্চি যায়গার ভৌগলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা করা হয়েছে, যা এদেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন খাতকে আরও বিকশিত করবে । তাই আমার মনে হয় এই গ্রন্থটি যেমন এদেশের প্রকৃতি ধ্বংসের বিরুদ্ধে একটা প্রামাণিক দলিল হিসাবে কাজ করবে, তেমনি দেশের পর্যটন খাতকে সমৃদ্ধ করতে অবদান রাখবে।“

ধ্রুব এষের প্রচ্ছদে এবং অন্বয় প্রকাশের প্রকাশনায় জিয়াউল হকের লিখা “বাংলাদেশের পাহাড়শুমারি” বইটি পাওয়া যাচ্ছে একুশে বইমেলার ৩৪ নম্বর স্টলে।

অর্থসূচক/এমআর

 

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.