রক্তদান কখনো বৃথা যায় না, আমরা তা প্রমাণ করেছি: প্রধানমন্ত্রী

বাঙালির ইতিহাস রক্তের আর আত্মত্যাগের ইতিহাস উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রক্তদান কখনো বৃথা যায় না। আমরা তা প্রমাণ করেছি। রক্তদানের মাধ্যমেই আমরা আমাদের ভাষার অধিকার ও স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি।

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর আমাদের সংস্কৃতির ওপর আঘাত যেমন পাকিস্তান আমলে বারবার এসেছে পঁচাত্তরের পর আমরা ঠিক একই রকম চেহারা দেখলাম। সেই সাথে বঙ্গবন্ধুর নাম যেমন ভাষা আন্দোলন থেকে মুছে ফেলা আবার এই দিকে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের যে ইতিহাস সেই ইতিহাস থেকেও মুছে ফেলা হলো। যে ৭ মার্চের ভাষণ আজকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল সে ভাষণ এখানে নিষিদ্ধ ছিল। তাহলে এরা কারা? এরা তো সেই পাকিস্তানি প্রেত্মাতাই, খুনিরা এবং খুনিদের পুরস্কৃত করা হলো।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বলেছিলেন কেউ দাবায়া রাখতে পারবে না। বাঙালিকে কেউ দাবায়া রাখতে পারেনি, পারবেও না। আজকে আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সব ভাষাভাষি এখন এই দিবসটি পালন করে। এটা বাঙালিরই একটা মর্যাদার আসন অর্জন করা। সেটা আসলে দিয়ে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। সেই মর্যাদাটা আমাদের দিয়ে গেছেন, যেমন স্বাধীনতাটাও তিনি দিয়ে গেছেন।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, সততার সাথে এগিয়ে যাওয়া যায়, যেকোনো অর্জন করা সম্ভব। সেই অর্জনটা আমরা করতে পেরেছি। আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। কিন্তু একটি বিষয়ে সবার লক্ষ্য রাখতে হবে, যখনই বাঙালি কিছু পায় বা তাদের মর্যাদা অর্জন করে বা বাঙালি এগিয়ে যেতে থাকে উন্নয়নের দিকে তখনই কিন্তু আবার অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র শুরু হয়। আবার আমাদেরই কিছু ভেতরে তো সব সময়ই থাকে। এই বাঙালির মধ্যে কিছু থাকবে যে এই অর্জনটা তো তাদের কাছে বোধহয় মনঃপূত হয় না। কারণ পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ থাকতেই তারা পছন্দ করে।

শেখ হাসিনা বলেন, একটা শ্রেণি আছে তারা কখনো আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে জানে না। তারা আত্মমর্যাদা বিকিয়ে দিয়েই আত্মতুষ্টি পায়। আর সেই শ্রেণিটা এখনো রয়ে গেছে আমাদের সমাজে। সেই জন্য যতই আমরা উন্নতি করি যতই এগিয়ে যাচ্ছি সারা বিশ্ব যখন সেই উন্নয়ন দেখে আমাদের দেশের কিছু লোক কিন্তু সব সময় অন্ধই থাকে। তারা তা দেখে না। তারা এই অর্জনের কথা বলতে গেলেও যেন তাদের দ্বিধা। কিন্তু কেন তাদের ভেতরে এই ধরনের মানসিকতা সেটাই আমার মাঝে মাঝে অবাক লাগে এবং আমার নিজের কাছে প্রশ্ন যে এরা কেন?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা স্বাধীন হয়েছি বলেই বিশ্বে এই মর্যাদা পেয়েছি। আজকের আমরা স্বাধীন হয়েছি বলেই তো আমাদের ভাষার জন্য যারা রক্ত দিয়েছে সেই রক্তের মর্যাদা তারা পেয়েছে। আজকে একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের না সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। তাদের এই মহান ত্যাগ যার মাধ্যমে আমরা মহৎ অর্জন করতে পেরেছি। আমাদের এই মর্যাদা নিয়েই চলতে হবে। আর যারা এই ধরনের মানসিকতায় ভোগে জাতির পিতা কিন্তু একটা কথা বলতেন যে, বাংলাদেশের মাটি এত ঊর্বর এখানে যেমন অনেক ফসল হয়, আবার সেখানে পরগাছা-আগাছাও জন্মে। এই আগাছা থাকবে এটা ঠিক। আগাছা কী করতে হবে সেটা কিন্তু বাঙালির নিজেকেই ভাবতে হবে। কারণ আমরা আমাদের স্বাধীনতার সুফল বাংলাদেশের মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাই।

অর্থসূচক/এএইচআর

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.