একদিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করলেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

উপাচার্য বিরোধী চলমান আন্দোলন একদিনের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিক্ষামন্ত্রীর ক্যাম্পাস ত্যাগের পর গোলচত্বরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি ইয়াসির সরকার।

তিনি বলেন, আমরা আশাকরি মহামান্য আচার্য (রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ) শিক্ষামন্ত্রীর মাধ্যমে আমাদের অভিযোগগুলো জেনে উপাচার্যকে দ্রুত অপসারণে উদ্যোগ নেবেন। মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর আমাদের করণীয় নির্ধারণে আগামীকাল শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সব শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা বৈঠক করবো। এই বৈঠকের পর আমাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবো। এর আগ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত থাকবে।

আন্দোলনরত এ শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ৮টি দাবি জানিয়েছি। এর মধ্যে আমাদের প্রধান দাবি উপাচার্যের পদত্যাগ ছাড়া বাকি সবগুলো ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন মন্ত্রী। এগুলো দ্রুত পূরণের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। উপাচার্যের অপসারণ যেহেতু তার এখতিয়ারভুক্ত নয়, তাই বিষয়টি তিনি আচার্যকে অবহিত করবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে টানা ২৬ দিন পর শুক্রবার নিজ বাসভবন থেকে বের হলেন শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এদিন উপাচার্য কার্যালয়ে অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে আলোচনার পর শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীসহ সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে উপাচার্যকে পরামর্শ দেন।

সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সব ঘটনার জন্য শিক্ষার্থীসহ সবার কাছে উপাচার্যকে দুঃখ প্রকাশ করার জন্য বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। এছাড়া যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে অনলাইন বা অফলাইনে দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম চালুর কথা বলা হয়েছে।

এক হল প্রভোস্টের অপসারণ দাবিতে উপাচার্যকে গত ১৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে অবরুদ্ধ করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। সেই সন্ধ্যায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে তার বাসভবনে নিয়ে যায়। এরপর থেকে আর বাসা থেকে বের হননি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন।

পুলিশি হামলা উপাচার্যের নির্দেশে হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ওই রাত থেকেই তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ১৯ জানুয়ারি থেকে সেখানে অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী। এরপর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে অন্যদের প্রবেশ বন্ধ করে দেন তারা। এক দিনের জন্য ওই ভবনের বিদ্যুৎ-পানির লাইনও বিছিন্ন করে দেওয়া হয়।

২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে অনশন ভাঙার পর উপাচার্যের বাসার সামনে থেকে অবস্থান ও ব্যারিকেড তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

অর্থসূচক/এমএস

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.